নিজস্ব প্রতিবেদক: বরগুনায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-২। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। রবিবার সকালে র‌্যাব-২ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক শিহাব করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি বরগুনার বামনা থানার এলাকায় সন্তানসম্ভবা এক মেয়েকে তার বাবা ও তার স্বামী মিলে ডৌয়াতলা সুন্দরবন ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। ওই ক্লিনিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক, ডাক্তার সবুজ কুমার দাস পরীক্ষা-নিরীক্ষা সহ আল্ট্রাসনো করে দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভুক্তভোগীর বাবাকে ২০ হাজার টাকা দিলে তারা অভিজ্ঞ সার্জন দিয়ে তার মেয়েকে অপারেশনসহ সম্পূর্ণ চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এতে ওই রোগীর বাবা অগ্রিম ১০ হাজার টাকা জমা দেন। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে ওই রোগীকে ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার রুমে অপারেশনের জন্য নিয়ে যায়। আর ওই ক্লিনিকের কর্তব্যরত ডাক্তার সবুজ কুমার দাস অন্য কোন অভিজ্ঞ সার্জন ও স্টাফ ছাড়া তার অদক্ষ সহকর্মীদের নিয়ে অপারেশন শুরু করেন। দীর্ঘ সময় পার হলেও অপারেশন থিয়েটার থেকে কোন সংবাদ না আসায় পরিবারের সন্দেহ সৃষ্টি হয়, তখন তারা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে অপারেশন থিয়েটার খোলার জন্য বলেন। ওই সময় অপারেশন চলছে বলে কক্ষের দরজা বন্ধ রাখেন। এভাবে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা পার হবার পর দরজা খোলার জন্য জোরালো দাবি জানালে, ডাক্তার ভুক্তভোগীর বাচ্চাকে তার পেটের মধ্যে আবারও রেখে সেলাই করে কসটেপ মেরে রাত ১১ টার দিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে, রোগীর হার্টবিট বেড়ে গেছে। তাকে জরুরি ভিত্তিতে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।  তাদের কথা মত, আগে থেকে ভাড়া করা এম্বুলেন্সে বরিশাল নেওয়ার পথে ভান্ডারিয়া থানা এলাকায় পৌঁছালে দীর্ঘ সময় রোগীর কোন সাঁড়াশব্দ না দেখে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেড় থেকে দুই ঘন্টা আগে রোগী মারা গেছে  বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রোগীর বাবা বাদী হয়ে বামনা থানায় আটজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার সময় র‌্যাব-২ এর একটি দল যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি অভিযান চালায়। অভিযানে আসামি মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মো. মিজানুর রহমান বরগুনা জেলার বামনা থানার মৃত আব্দুল খালেক হাওলাদারের ছেলে।
এনডিটিভিবিডি/২১জানুয়ারি/এএ