ঢাকা , রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

ডলারের দাম-সুদহারের চাপ কাটিয়ে উঠবো: নিহাদ কবির

মে ০৯, ২০২৪
অর্থনীতি
ডলারের দাম-সুদহারের চাপ কাটিয়ে উঠবো: নিহাদ কবির

ডলারের দাম বাড়ানো এবং সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কারণে, অর্থনীতিতে কিছুটা চাপ সৃষ্টি হলেও সেই চাপ কটিয়ে উঠার মতো আত্মবিশ্বাস ব্যবসায়ীদের রয়েছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির।

তিনি বলেছেন, যদি কার্ভ মার্কেটের (খেলাবাজার) সঙ্গে প্রফেশন রেটের একটা সামঞ্জস্য থাকে সেটা আমাদের জন্য ভালো। তাহলে টাকা পাচার, নন-ব্যাংকিং মাধ্যমে ডলার আসা-যাওয়া এগুলো অনেক কমে যাবে। সেটি দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলারের দাম বাড়ানো এবং সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা আসার পর বৃহস্পতিবার (৯ মে) গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় নিহাদ কবির এ কথা বলেন।

এক লাফে ডলারের দাম ১১৭ টাকা নির্ধারণ করাকে কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে নিহাদ কবির বলেন, টাকার ওভার ভ্যালুয়েশনের একটা বেনিফিট আমরা পেয়েছি। এখন রিয়েল ইকোনমিক এক্সচেঞ্জ রেটের কাছাকাছি টাকার যে দর সেটার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কাজেই সেই বেনিফিটটা আমরা ভুলে যাবো, সেটা ঠিক না। আমরা এডজাস্ট করে নেবো।

কীভাবে এডজাস্ট করবেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে আমরা এই এডজাস্ট করে নেবো। সেখানে আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আমাদের নিজেদেরও বাড়াতে হবে। সরকারের যে পলিসি আছে, নিতী সহায়তা আছে সেগুলোও আমাদের সহায়ক হতে হবে। তাহলে আমরা এটা কাটিয়ে উঠতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, এই এক্সচেঞ্জ রেটটা, এটার ওপর একেবারে যে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তা কিন্তু না। আমি যেটা বলেছি- টাকার ওভার ভ্যালু হয়ে এসেছে বিভিন্ন কারণে। বিভিন্ন নীতিগত কারণে। এখন আর সেটার সুযোগ নেই। যদি কার্ভ মার্কেটের সঙ্গে প্রফেশন রেটটার একটা সামঞ্জস্য থাকে সেটা আমাদের জন্য ভালো। তাহলে টাকা পাচার, নন-ব্যাংকিং মাধ্যমে ডলার আসা-যাওয়া এগুলো অনেক কমে যাবে। এগুলো তো আমাদের অর্থনীতির জন্য ভালো।

সুদের হার মার্কেটের ওপর ছেড়ে দেওয়াসহ একই সঙ্গে অর্থনীতির ওপর তিনটি চাপ দেওয়া হলো। এটা সহ্য করার মতো অবস্থায় কি আমাদের অর্থনীতি আছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে নিহাদ কবির বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে ব্যয় কিছু বাড়বে। কিন্তু আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি ডিরেক্টিভ (বেধে দেওয়া) সুদের হারের পক্ষপাতী আমি বা আমার চেম্বার খুব একটা না। এতে তাৎক্ষণিক কিছু ফল পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী অর্থনীতির ক্ষতিই হয়। সেটা আমরা কিছুটা দেখেছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি সুদের হারকে কার্যকরী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারিনি।

তিনি বলেন, সরকার জায়গা মতো যদি আমাদের নীতি সহায়তা দেয়, আমাদের বেশ কিছু পরামর্শ আছে সেগুলো যদি তারা গ্রহণ করে, তাহলে আমরা এই চাপ কাটিয়ে উঠবো। এর থেকে অনেক বড় চাপ আমরা কিন্তু কাটিয়ে উঠেছি।

কি ধরনের নীতি-সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের যে পলিসিগুলো দেওয়া হয়, সেগুলো যেন মধ্যমেয়াদে, দীর্ঘমেয়াদী দেওয়া হয়। আমাদের কর নীতি, প্রতিবছরই যেন আমাদের চিন্তা করতে না হয় এ বছর করের কি পরিবর্তন আসবে, কি হবে, সে রকম না। একটা ধারাবাহিকতা থাকা দরকার।

নিহাদ কবির বলেন, বাংলাদেশ এর থেকে অনেক বড় অর্থনৈতিক চাপ কাটিয়ে উঠে এসেছে। কাজেই আমাদের সেই কনফিডেন্স (আত্মবিশ্বাস) আছে। আমরা তো বলবোই আমাদের এই খরচ বেড়ে যাবে। খরচ যেগুলো বাড়ে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে। সময়, টাকা, অপচয়, জিনস-পত্র নষ্ট হওয়া এগুলো থেকে যদি আমরা মুক্তি পায়, তাহলে এই চাপ আমরা সামলে উঠতে পারবো।

আইএমএফ বিভিন্ন খাতে থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। এ বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কি? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিজনেস কমিউনিটির অবস্থান হচ্ছে যদি নীতি-সহায়তাগত ভাবে আমাদের কর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করে দেওয়া হয়, তাহলে তো আমাদের ভর্তুকির প্রয়োজন হয় না। আমরা ডেভেলপিং কান্ট্রিতে উপনীত হতে যাচ্ছি, এখানে ভর্তুকি আমাদের ম্যানেজ করতেই হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা তুলেও দিতে হবে। ক্ষেত্র বুঝে, জায়গা বুঝে সেটা রাখতেও হবে।

এনডিটিভি/পিআর