আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কোনো দুর্নীতিবাজদের ছাড় ও ক্ষমা নেই। শেখের বেটি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বাংলাদেশকে দেখিয়ে দেবেন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তিনি কতটা কঠোর।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সবার উদ্দেশে বলছি, কেউ বাড়াবাড়ি করবেন না, ক্ষমতার দাপট কেউ দেখাবেন না।’
শনিবার দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের ভোট ও ভাতের অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ৭৫ বছর এই দলের বয়স। দীর্ঘ সংগ্রাম, আন্দোলন, ঝড়, দুর্যোগ, ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে অকুতোভয় গতিতে এগিয়ে যাওয়ার নাম আওয়ামী লীগ। আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাই। আমাদের জন্ম বাংলাদেশের জনতার মাঝ থেকে, আমাদের জন্ম জনগণ থেকে। আমরা অস্ত্র উঁচিয়ে শেষ রাতে ক্ষমতা দখলকারী দল নয়। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃতে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বলেছিলাম আমরা বছরব্যাপী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করব। কিন্তু পত্রিকায় খবর হয় আমরা নাকি পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করি। গতকাল তো সাইকেল র্যালি করলাম, কই কাল তো কোনো দলের কিছু ছিল না। আমরা সারা বছরই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করব। মহানগর, থানা, জেলা, ইউনিয়নেও এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এমনকি আগস্ট মাসের পরে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ হবে। শেখ হাসিনা সেগুলোতে বক্তব্য রাখবেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজ অবাক লাগে বিএনপি বড় বড় কথা বলে, তাদের নেতাদের আন্দোলনের জোর নাই, তাদের মুখের বিষে যত জোর। তাদের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার একটুও বিচলিত নয়।’
কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপিতে এখন আতঙ্কের নাম তারেক রহমান। টেমস নদীর পাড় থেকে তার ফরমান আসে। তারেক রহমানের এই ফরমানে ফখরুল সাহেব আপনি কোথায় যাবেন, গয়েশ্বর বাবু কোথায় যান কেউ জানে না। তারেক রহমান লন্ডনে বসে কর্মসূচি দেয়, মেড ইন লন্ডন কর্মসূচি। তিনি লন্ডনে বসে নেতা বানান। বাংলাদেশের জনগণ এই মেড ইন লন্ডন কর্মসূচি মানে না, মানবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পরের দিন সকালে ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসে ফুলের মালা আর মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়। কিন্তু পাত্তা পায়নি। যত দোষ নন্দ ঘোষ৷ আপনারা ক্ষমতার জন্য যে কারো দাস হতে আপত্তি নাই৷ আপনাদের কথায় কথায় নিষেধাজ্ঞা, কথায় কথায় ভিসা নীতি। ২৮ অক্টোবর যে নাটক বানিয়েছেন মিয়ান আরেফিকে এনে, সে নাকি বাইডেনের বন্ধু। বাইডেনের বন্ধু সেজে সাংবাদিকদের সামনে তাকে আনা হয়৷ পরে দেখা গেল সে ভুয়া, ডাবল ভুয়া। ওই বন্ধু এরপর পালিয়ে যাবে, এয়ারপোর্টে গেল, পুলিশ গিয়ে ধরলো তারপর তার গায়ে একটা দুইটা ডান্ডা লাগার পর সে তখন বরিশালের ভাষায় বাংলা বলে। হায়রে আরেফি। ফখরুল এখন সবার মুক্তি চায় কিন্তু সেই আরেফির তো মুক্তি চায় না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি জাতীয়তাবাদী দুর্নীতিবাজ দল। তারেক রহমান পলাতক আসামি, তিনি দুর্নীতি করে দেশ ছেড়ে পালান। বিএনপি নেতারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, আপনাদের নেতা তো বড় দুর্নীতিবাজ। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে তারেক দেশের নির্বাচিত সরকারকে নিয়ে কথা বলছে। ওই দুর্নীতিবাজকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিচার করতে হবে।’
বিএনপির উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘আন্দোলন করেন, তবে এতে সহিংসতার পথে হাঁটলে খবর আছে।’
দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগের নগর কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এনডিটিভি/পিআর