ঢাকা , মঙ্গলবার, মার্চ ১১, ২০২৫

জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে

মার্চ ০৯, ২০২৫
বাংলাদেশ
জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে

ডেস্ক রিপোর্ট: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় এক প্রবাসীর বাড়িতে জোরপূর্বক গাছ কেটে, মাটি ভরাট করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে জামশেদ উদ্দিন নামের স্থানীয় প্রভাবশালী এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রবাসী এমরান উদ্দিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত জামশেদ উদ্দিন হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে। সে জাহাজমারা ইউনিয়নের জামায়াত ইসলামীর রুকন।

জানা গেছে, জাহাজমারা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে এমরান উদ্দিন অনেক দিন থেকে সৌদি আরবে বসবাস করে আসছেন। প্রবাস জীবন থেকে কষ্টসাধ্য উপার্জন করে নিজ গ্রামে ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ জমির বাড়ি ক্রয় করে বসবাস করে আসছেন। শুক্রবার সকালে জামশেদ নিজ নামের ক্রয়কৃত জমির অংশ প্রবাসী এমরানের বাড়ির অংশে রয়েছে বলে দাবি করেন। সেই মোতাবেক জামশেদ লোকবল নিয়ে এমরানের বাড়ি থেকে নারকেল গাছসহ অন্যান্য গাছ কেটে পাওয়ার ট্রিলারে ভর্তি করে নিয়ে যান। পরে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ভরাট করেন। এ সময় প্রবাসীর বাবা আমির হোসেন বাঁধা দিতে গেলে আসামিদের হাতে থাকা দা, কুড়াল, খন্তা হাঁকাইয়া মারমুখী হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং নানাভাবে হেনস্তা করেন। এরপর ভুক্তভোগী প্রবাসীর বাবা বাদী হয়ে হাতিয়া আদালতে ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে ঘটনার দিন এমরান উদ্দিন প্রবাস থেকে মোবাইলে আসামিদেরকে বারবার নিষেধ করলেও আসামিরা তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং উলটো চাঁদা দাবি করেন। এমতাবস্থায় এমরান সৌদি আরবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কাছে দেশের বাড়িতে জোর করে জমি দখলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ও পরিবারের নিরাপত্তা গ্রহণের আবেদন করেন। বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের শ্রম কাউন্সেলর নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনটির আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করেন।

 

অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা জামশেদ উদ্দিন বলেন, আব্দুর রহিমের থেকে এই জায়গা আমি কিনেছি। আমি আমার জায়গা থেকে গাছ কেটেছি এবং আমার জায়গায় মাটি ভরাট করেছি। কারো কোনো জায়গা আমি দখল করিনি।

এদিকে জমি বিক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, আমি এই জায়গা প্রবাসী এমরান উদ্দিনের কাছে বিক্রি করেছি। আর জামশেদ উদ্দিনের কাছে যেটা বিক্রি করেছি সেটা এই সীমানার উত্তর পাশে। কিন্তু জামশেদ জোর করে এমরানের সীমানায় ঢুকে গাছ কেটে, মাটি ভরাট করে দখল করার চেষ্টা করেন।

জাহাজমারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এমরান উদ্দিন তার ক্রয়কৃত জায়গায় ভোগ দখল করে আসছেন। হঠাৎ করে জামশেদ লোকজন নিয়ে এসে গাছ কেটে মাটি ভরাট করে জায়গা দখলের চেষ্টা করেন। সন্ত্রাসী কায়দায় এভাবে জোরপূর্বক জায়গা দখল আইন সংগত হয়নি।

হাতিয়া থানা জামায়াতের আমির মাস্টার বোরহানুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে আমি জেনেছি। এটি তদন্ত করার জন্য আমাদের সাংগঠনিকভাবে একজন প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, প্রবাসীর অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।