নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-অপারেশনস) মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন. রাজনৈতিক কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মারামারি, আগুন দেওয়া ও অবরোধের ঘটনায় করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার এসব কথা বলেন।
বিএনপি জামায়াতসহ বিরোধী পক্ষের ২৬ হাজার নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এ তথ্য সঠিক কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার হোসেন বলেন, নিয়মিত মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় সারা দেশে প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ জনের মতো গ্রেপ্তার হন। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের পদধারী সংখ্যা কত, সে হিসাব তৈরির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। কেউ ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ত হলে পুলিশ শুধু তাঁদেরই গ্রেপ্তার করছে।
‘আসন্ন সংসদ নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে, পুলিশ সর্বাত্মকভাবে সেই চেষ্টা করছে’ উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছু নাশকতার ঘটনা ঘটেছে, সেসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেউ যাতে নাশকতা ঘটাতে না পারে, সে জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রেললাইনকে নিরাপদ রাখতে অনেক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েকটি রেলস্টেশনকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে সেখানে ও রাতে চলাচলকারী ট্রেনগুলোতে আইপি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে।
যাঁরা লিফলেট (প্রচারপত্র) বিতরণ করছেন, ভোট বয়কটের আহ্বান জানাচ্ছেন, তাঁদের আটক করার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা নির্বাচনী কাজে বাধার সৃষ্টি করা অপরাধ। নির্বাচন আইন ও বিধি অনুযায়ী এটা বাধা। সংগত কারণে বাধা সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নিতে হয়। তা না হলে আরও বড় ঘটনা সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি জেলায় গুলির ঘটনা ঘটেছে এবং রাজনৈতিক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অথচ এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি আনোয়ার বলেন, প্রতিটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় কিছু গ্রেপ্তার করা হয়েছেন, অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে উল্লেখ করে এই ডিআইজি বলেন, ‘এটি নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন ও বহন নিষিদ্ধ করে একটি পরিপত্র জারি হয়েছে। নির্বাচনকালে কেউ বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন বা বহন করতে পারবেন না। আমাদের কাছে নির্দিষ্ট এলাকায় বৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের দুটি অভিযোগ এসেছে। আমরা তদন্ত করে দেখেছি, সেগুলো ছিল খেলনা অস্ত্র।’ তিনি বলেন, পুলিশের কাছে সব প্রার্থী সমান। প্রচার প্রচারণার ক্ষেত্রে সব প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পান, সে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
নাশকতায় জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ২০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন বলে জানান ডিআইজি আনোয়ার। ঘটনার ধরন অনুযায়ী সেই পুরস্কারের পরিমাণ আরও বেশি হবেও বলে জানান তিনি।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ফুটানো ও ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ : এদিকে থার্টি ফার্স্টের নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, থার্টি ফার্স্টের নিরাপত্তার বিষয়ে ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সভা হয়েছে। আইজিপিও বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ফুটানো ও ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। এ ছাড়া গুলশান, বনানী, ৩০০ ফিটসহ বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর ও পুলিশ সদর দপ্তরের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহছান।
এনডিটিভিবিডি/৩০ ডিসেম্বর/এএ