বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জুম মিটিংয়ে দেওয়া বক্তব্যকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে বিকৃত ডিপ ফেক ভিডিও তৈরি করে দেশে-বিদেশে থাকা বিএনপির শুভানুধ্যায়ীদের কাছে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটি এমন একটি লজ্জাজনক এবং ঘৃণ্য চক্রান্তের বিষয় যা কেবল বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বের রাজনীতিতে বিরোধী মতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা প্রচারের একটি জঘন্য উদাহরণ হিসেবে মাইলফলক হয়ে থাকবে। সরকারপন্থি কয়েকটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং মিডিয়া আউটলেট থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জুম মিটিংয়ে দেওয়া বক্তব্যকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে বিকৃত ডিপ ফেক ভিডিও তৈরি করে দেশে-বিদেশে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। আবার সেই চাঁদাবাজির ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। শুধু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই নন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ বেশ কয়েকজন সদস্যকে নিয়েও একই ধরনের ডিপ ফেক ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় ফেসবুক এবং ইউটিউবে থাকা এমন ডিপ ফেক ভিডিওগুলোকে শনাক্ত করে সেগুলো অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শুধু লন্ডনে বসে প্রযুক্তির সহায়তায় দেশের আনাচে-কানাচে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এই যোগাযোগের জন্য প্রধানত, ব্যবহার করা হয় জুম নামে একটি অ্যাপ।
বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ দেশ-বিদেশের সব মানুষকে অবহিত করে রিজভী বলেন, আপনারা এসব ডিপ ফেক ভিডিও থেকে সতর্ক থাকবেন। বিএনপির কোনো নেতা কখনোই এভাবে ভিডিও কল করে কারও কাছে টাকা চাইবেন না এই বিশ্বাসটা আপনাদের নিজেদের মধ্যে রাখবেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এহেন রীতিবিরুদ্ধ অশালীন ও অপকর্মের হোতারা হয়তো এসব ভিডিও দিয়ে মেসেজ আদান-প্রদানকারী অ্যাপ, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো ব্যবহার করে আবারও এমন তৎপরতা চালাতে পারে। কেউ যদি এভাবে ভিডিও কলে আপনাদের কাছে টাকা চায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সেটা দলীয় নেতাদের অবহিত করুন যাতে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপির তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, আওয়ামী লীগের হয়ে বিরোধীদলকে হেয় করার জন্য এহেন অপতৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘নাহিদ রেইন’ নামে একজন প্রতারক ও জেল খাটা অপরাধী। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই অপরাধীকে অনলাইনে এবং অফলাইনে প্রকাশ্যে প্রমোট করছে ভিন দেশের প্রভাবশালী একজন ব্যক্তি। নাহিদ রেইন এর টুইটার হ্যান্ডেলের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করলেই এই দুঃখজনক অপকর্মের সত্যতা পাওয়া যায়।
এসময় তিনি, ডিপফেক ভিডিও তৈরি করে বিএনপি নেতাদের নামে চাঁদাবাজির অপরাধে অবিলম্বে ‘নাহিদ রেইন’ নামক প্রতারক দুষ্কৃতকারীকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাহিদা রফিক, তাহসিনা রশদী লুনা, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সেলিম ভূইয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।