নিজস্ব প্রতিবেদক: নয় ঘন্টার মধ্যে অজ্ঞাত লাশের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেটিগেশন (পিবিআই) বাগেরহাট জেলা। সংস্থাটির দাবি, তারা হত্যাকান্ডে জড়িত একমাত্র আসামি মো. আমানুল্লাহ হোসেন গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার বিকালে পিবিআইয়ের সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মো. আমানুল্লাহ হোসেন খুলনা জেলার কয়রা থানার চরকশোডাঙ্গা গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার বিকাল তিনটার সময় বাগেরহাটের ফকিরহাট থানার কাটাখালী-মংলা রোডে জয় জুট মিলের সামনে মুরারী মোহন দেবনাথের বাগানে একটি অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পিবিআইয়ের বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুর রহমান একটি টিমসহ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে অজ্ঞাত নারীর লাশ সনাক্ত করেন। জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী ভুক্তভোগী নারীর নাম -হামিদা বেগম। এ ঘটনায় নিহত হামিদার বোন ছালমা খাতুন বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনাটি পিবিআইয়ের সিডিউলভুক্ত হওয়ায় হামিদার ছেলে ও ভাইয়ের সাথে কথা বলে তার জীবন যাপন সর্ম্পকে জেনে পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। নিহতের পরিবার থেকে জানা যায় তিনি গত ৪ জানুয়ারি ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি। গোপনসূত্রে জানা যায়, হামিদার প্রথম স্বামী ছানাউল্লাহ পাটোয়ারী মারা যাওয়ার পর তার সাথে রাজমিস্ত্রী মো. আমানুল্লাহ হোসেনের সাথে প্রেমের সর্ম্পকের সৃষ্টি হয়। এই সূত্র ধরে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআইয়ের এসপি আবদুর রহমানের নেতৃত্বে পিবিআইয়ের একটি দল মো. আমানুল্লাহ হোসেনকে শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২ টার সময় রুপসা থানার ইলাইপুর (মোমিনবাগ) রুপসা, খুলনা থেকে তার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নিহত হামিদার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আমানুল্লাহ হোসেনের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, বছর দুয়েক আগে সে হামিদা বেগমের গ্রামে রাজমিস্ত্রির কাজে যায়। সেখানেই হামিদার সাথে তার পরিচয় ও প্রেম হয়। তারা শরিয়া মোতাবেক ইমামের মাধ্যমে বিয়ে করলেও কোন কাবিন হয়নি। হামিদা বেগম তার ভাড়া বাসায়ও এসে থেকেছে। আমানুল্লাহ ভাষ্যমতে হামিদার সাথে একাধিক ব্যক্তির সাথে অবৈধ শারীরিক সর্ম্পক করে। অনেকবার শপথ করে বোঝানোর পরও হামিদা অবৈধ সর্ম্পক ছাড়তে পারে না। এ সব বিষয়ে হামিদার সাথে বোঝাপড়া করার জন্য আমানুল্লাহ বৃহস্পতিবার ভোরে হামিদাকে আসতে বলে। তারা দুইজন ওইদিন সকাল ১০ টার সময় ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। আর বাগানের মধ্যে বসে কথা বলতে থাকে। আমানুল্লাহ তার স্ত্রীর গলায় ওড়না জড়িয়ে ধরে তার অবৈধ সর্ম্পকের বিষয়ে কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তখন হামিদার ব্যবহৃত চাদর দিয়ে তাকে ঢেকে দিয়ে সেখান থেকে তার ভাড়া বাসায় চলে যায়। সে ওইদিন সন্ধ্যায় আবারও ঘটনাস্থলে আসে এবং চাদর উচিয়ে হামিদাকে দেখে আবার ঢেকে রেখে চলে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় সে একাই ওই হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে তার সাথে আর কেউ ছিলো না।
নিহত হামিদা বেগম খুলনা জেলার দাকোপ থানার কৈলাশগঞ্জ গ্রামের আব্দুল বারেক গাজীর মেয়ে।
এনডিটিভিবিডি/০৬জানুয়ারি/এএ