ঢাকা , রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

শ্যামনগরে দখল, ভাংচুর ও চাঁদাবাজির মামলায় আ'লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা কারাগারে

নভেম্বর ২০, ২০২৪
আইন-আদালত
শ্যামনগরে দখল, ভাংচুর ও চাঁদাবাজির মামলায় আ'লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা কারাগারে

শেখ আমিনুর হোসেন, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা: আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দলীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে এক বিএনপি কর্মীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, ভাংচুর ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় বহুল আলোচিত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বংশীপুরের গাজী গোলাম মোস্তফা ওরফে বাংলা ভাইয়ের জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর '২৪) সাতক্ষীরার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নয়ন কুমার বড়াল উভয়পক্ষের শুনানী শেষে এ আদেশ দেন।

গাজী গোলাম মোস্তফা শ্যামনগর উপজেলার বংশীপুর গ্রামের আজাদ আলী গাজীর ছেলে ও শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক।

মামলার বিবরনে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার পাতড়াখোলা গ্রামের আব্দুল গফুর সরদারের ছেলে বিএনপি’র সক্রিয় কর্মী এসএম আরাবুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে বংশীপুর বাসস্টাণ্ডে ২০টি দোকান নির্মাণ করে নিজে মাছের সেট, ব্যাংক ও বীমাসহ বহুমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। পার্শ্ববর্তী ভৈরবনগর মৌজায় তার কৃষি জমিও রয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত গোলাম মোস্তফা বাংলঅ ভাই, তার ভাই ঈশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. জিএম শুকুর আলী, ভাই আব্দুল কাদেরসহ নয়জন বাদির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষায় চাঁদা দাবি করে। ২০১৪ সালের ১০ মার্চ সকালে গোলাম মোস্তফা ও শুকুর আলীর নেতৃত্বে বাদি এসএম আরাবুজ্জামান এর নিকট ২০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে তাকে বিতাড়িত করেন। ২০১৫ সালের ২০ জুন ওই আসামীরা বাদির কাছ থেকে চার লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে। তাতেও আরাবুজ্জামান রক্ষা পাননি। গত ৩ আগষ্ট বাদি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলে নেওয়ার চেষ্টা করলে আসামী গোলাম মোস্তফাসহ সকল আসামীরা ভাংচুর চালিয়ে পাঁচ লাখ টাকার মালামাল ভাংচুর করে। এ সময় আবারো ব্যবসায়ি এসএম আরাবুজ্জামান এর নিকট ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসামীরা। টাকা না দেওয়ায় তাকে আবারো বিতাড়িত করা হয়। পরিস্থিতি অনুকুলে পেয়ে এসএম অরাবুজ্জামান গত ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা (সিআর-৫৫/২৪) দায়ের করেন। মামলায় গাজী গোলাম মোস্তফা, তার ভাই জিএম শুকুর আলী, আব্দুল কাদেরসহ নয় জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৬ জনকে আসামী করা হয়। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়। থানা- মামলা নং-১৩, জিআর-২৭৬। শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক আব্দুল মালেক তদন্তভার পেয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর এজাহারভুক্ত নয়জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় অন্য আসামীরা জামিনে মুক্তি পেলেও ১নং আসামী গাজী গোলাম মোস্তফা পলাতক ছিলেন। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পাশাপাশি গত ৪ নভেম্বর তার মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে গাজী গোলাম মোস্তফা ওরফে বাংলা ভাই গত মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানী শেষে বিচারক নয়ন কুমার বড়াল তার জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাদিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. মিজানুর রহমান বাপ্পি। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. আবু বক্কর ছিদ্দিক।

আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আবু বক্কর ছিদ্দিকি সাংবাদিকদের কাছে গোলাম মোস্তফার জামিন আবেদন না’মঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

এনডিটিভি/এলএ