‘ওরা প্রশ্ন করে, ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। আমি প্রশ্ন করছি, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী কে হবেন?’ আবগারি দুর্নীতি মামলায় অন্তর্বর্তী জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে এমনই প্রশ্ন তুললেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার দাবি, বিজেপি এবার সরকার গঠন করলেও আগামী বছরই অবসর নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার মতে, এবার তাই নিজের জন্য ভোট চাইছেন না মোদি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শনিবার কেজরিওয়াল বলেন, ‘আগামী বছর মোদির বয়স হবে ৭৫ বছর। আর বিজেপিতে কারও ৭৫ বছর বয়স হয়ে গেলেই তিনি অবসর নেন। আদবানী, মুরলী মনোহর যোশী, সুমিত্রা মহাজন, যশবন্ত সিনহা সবাই অবসর নিয়েছেন। তাহলে আগামী বছর ১৭ সেপ্টেম্বর মোদিও অবসর নেবেন। তখন কে হবেন প্রধানমন্ত্রী?”
কেজরিওয়াল আরও বলেন, ‘এরপর অমিত শাহকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে। সুতরাং মোদি নিজের জন্য নয়, অমিত শাহের জন্য ভোট চাইছেন। তাহলে মোদির গ্যারান্টি পূরণ করবে কে?’
কেজরিওয়াল আরও দাবি করেন, বিজেপি এবার ভোটে জিতলে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও দুই মাসের মধ্যে বদল হবে। পদ হারাবেন যোগী আদিত্যনাথ।
বিজেপিকে নিশানা করে আপ প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি খুব বিপজ্জনক মিশন শুরু করেছেন। সেই মিশনের নাম “ওয়ান নেশন ওয়ান লিডার”, যেখানে দেশের সব নেতাকে শেষ করে দিতে চান। বিরোধী দলের সব নেতাকে জেলে পাঠাতে চান।’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেন, এবারের নির্বাচনে বিজেপি জিতলে কয়েকদিন পর মমতা দিদি, তেজস্বী যাদব, স্টালিন, পিনারাই বিজয়ন, উদ্ধব ঠাকরেরাও জেলে যাবেন।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে ভোটের প্রচারে যাতে কেজরিওয়াল যোগ দিতে পারেন, তার জন্য জামিন দেওয়ার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে ছিল কেজরিওয়ালের মামলার শুনানি। সেই শুনানি শেষেই আগামী ১ জুন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে কেজরিওয়ালকে।
মূলত আগামী ১ জুন লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটগ্রহণ হবে, সেই দিন পর্যন্তই জেলের বাইরে থাকবেন কেজরিওয়াল। ২ জুন আবার তাকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, মদ বিক্রির নীতিমালা সংক্রান্ত মামলায় (আবগারি) নয়টি সমন এড়িয়ে যাওয়ার পর গত ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তারপর থেকেই দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বন্দি অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
তবে কেজরিওয়াল ও তার দল একাধিকবার দাবি করেছে, বিজেপি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা ইডি তাকে গ্রেপ্তার করে আম আদমি পার্টিকে দমাতে চায়। আরও বেশ কয়েকটি বিরোধী দলও বিজেপির বিরুদ্ধে ইডিকে নিজ স্বার্থে কাজে লাগানোর বলে অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, নেতাদের বিরুদ্ধে এই সংস্থাকে ব্যবহার করছে বিজেপি।
এনডিটিভি/পিআর