নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি ধরা হচ্ছে বলে সবাই জানতে পারছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যখন হাত দিয়েছি, তখন আমি কাউকে ছাড়ব না। দুর্নীতিবাজ ধরছি বলেই, এখন সবাই জানতে পারছেন।
রবিবার (১৪ জুলাই) বিকালে চীন সফর নিয়ে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমার বাসার পিয়ন ছিল। সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে।
খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। এটা বাস্তব কথা। কী করে বানালো এই টাকা। যখন আমি জানছি, তাকে বাদ দিয়ে কার্ড সিজ করে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা তো হয়।'
তিনি বলেন, 'সারাবিশ্বেই যে দেশটায় অর্থনীতিতে উন্নতি হয়, সেখানেই এ ধরনের কিছু অনিয়ম হয়। কিছু লোকের হাতে চলে যায় কিছু টাকা-পয়সা বানায়। তারা তো অপেক্ষা করে থাকে। যুগযুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে।
ধরার পর এগুলো চোখে আসে। তাছাড়া তো হয় না। যখনই ধরা পড়ে তখনই আমরা ব্যবস্থা নেই।'
প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়ার আমলে প্রশ্ন ফাঁস শুরু হয়েছিল। খালেদার আমলে সেটা চলেছে। আমরা এটা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি এবং প্রশ্ন ফাঁস রোধে সফল হয়েছি।
এক সময় হাওয়া ভবন থেকে পাঠানো তালিকায় বিসিএসে চাকরি হতো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কোনো পরীক্ষা হতো না। হাওয়া ভবনের তালিকা অনুযায়ী বিসিএস ক্যাডার হতো।
চলমান কোটা আন্দোলন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত থেকে সমাধান না আসবে ততক্ষণ আমাদের কিছু করার থাকে না। এই বাস্তবতা তাদের মানতে হবে। আর যদি না মানে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। রাজপথে আন্দোলন করছে, আন্দোলন করতেই থাকবে। তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারবে না। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভবে আন্দোলন করছে ততক্ষণ কেউ কিছু বলছে না।'
কোটা নিয়ে ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে খুব বিরক্ত হয়ে কোটা বাতিলের কথা বলেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের অফিসে আক্রমণ, মানুষের ওপর আঘাত—এসব দেখে আমি আমি খুব বিরক্ত হয়ে যাই। তখন এক পর্যায়ে বলি কোটা বাদ দিলাম।'
কোটা বন্ধ করার আজকে ফলাফলটা কী দাঁড়াল, প্রশ্ন রেখে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, 'কোটা বাতিলের উদ্দেশ্যটা ছিল আগে দেখ কোটা বাদ দিলে অবস্থাটা কী হয়। এখনো কী অবস্থা হয়েছে সেটা দেখতে বেশিদূর যাওয়া লাগবে না। এবারই দেখেন, ফরেন সার্ভিসে মাত্র দুই জন মেয়ে চাকরি পেয়েছেন। আর পুলিশ সার্ভিসে চার জন মেয়ে চান্স পেয়েছেন। কোটা বন্ধ করে দেওয়ার পরে ২৩টি জেলা থেকে একজনও পুলিশে চাকরি পাননি।'
আমাদের দেশের সব এলাকা সমানভাবে উন্নত নয়। কোনো কোনো এলাকায় অনগ্রসর সম্প্রদায়ও আছে। সেইসব এলাকার মানুষের কি কোনো অধিকার থাকবে না, প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
এনডিটিভিবিডি/১৪জুলাই/এএ