ডেস্ক রিপোর্ট: যশোরের বাজারে বেড়েছে শীতকালীন সবজির সরবরাহ। এতে দামেও এসেছে কিছুটা স্বস্তি। গত নভেম্বর মাসের তুলনায় চলতি ডিসেম্বর মাসে প্রতিটি সবজির দাম কমপক্ষে ২০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। নভেম্বরে যে সকল সবজি খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে সেসব এখন ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহ থেকে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এতে প্রতিটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে। সামনে শীতকালীন আরও বিভিন্ন ধরনের সবজির পরিমাণ বাড়বে। এতে করে সামনের দিনগুলোতে সবজির দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন সবজি ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) যশোর শহরের বড়বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাজার, রেলস্টেশন বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
শহরের জেলরোড এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া খাতুন।পেশায় তিনি একজন স্কুল শিক্ষিকা। সবজি কিনতে এসেছিলেন বড়বাজারে। তিনি বলেন 'কিছুদিন আগেও বাজারে বিভিন্ন সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও এখন সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। বাজারে এখন প্রতি কেজি সবজির দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে এমন দামেই বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।
এদিকে পেঁয়াজের বাজারেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে, কমেছে দামও। এক-দেড় মাস আগে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, এখন কেজিতে ৪০ টাকার মতো কমেছে। বাজারে এখন দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজের কেজিতে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এছাড়া রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৬০ টাকায়।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, মুলা ৩০-৩৫ টাকা, কচুরলতি ৭০ টাকা ও পটোল ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৬০ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শিম মানভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। কাচকলা ৫০ টাকা, হাইব্রিড লেবুর হালি ৩০ এবং মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, নতুন আলু ৮০ টাকা ও পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়। আর মানভেদে ফুলকপি ৫০ টাকা, পাতাকপি ৩০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। ইন্ডিয়ান আদা ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
এদিকে ডালের দামে দেখা গেছে স্থিতিশীল। প্রতি কেজি মসুর ডাল কিনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, বুটের ডাল ৭০ টাকা, ছোলার ডাল ১৪০ টাকা, মুগডাল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।
বাজারে মুরগির দামও অপরিবর্তিত দেখা গেছে। গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৭৫ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৯০, লেয়ার ৩২০ ও দেশী মুরগি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়। এছাড়া খাসির মাংস কেজি দরে এক হাজার ও গরুর মাংস ৭০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে ইলিশের আমদানি কমেছে যার ফলে বেড়েছে ইলিশের দাম কেজি সাইজের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২০০ টাকায়। জিয়েল মাছ ৪৮০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮৫০ টাকা, চাকা চিংড়ি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রুই মাছ ২০০ টাকা, টাকি মাছ ৩৬০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০ টাকা ও চাষের কই ২৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
শহরের বড়বাজারের মেসার্স চৌকিদার স্টোরের মালিক রুহুল আমিন বলেন, বাজারে বেশ কিছু দিন ধরে শীতকাল নতুন সবজি উঠেছে। এতে করে দামও আগের তুলনায় অনেক কমেছে। প্রতিটা সবজিতেই ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। এতে করে ক্রেতাদের মধ্যেও স্বস্তি ফিরেছে।
বড়বাজারের আরেক বিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত শীতকালীম সবজি এসেছে। দামও আগের তুলনায় সব ধরনের সবজিতে অনেকটা কমেছে।
এনডিটিভি/এলএ