আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের চলমান অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সাথে বৈঠক করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার দিল্লিতে ভারতের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে।
কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে সোমবার ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের এই প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে যাওয়ার পর দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রীরা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইস্যুতে দেশটিতে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান অস্থিতিশীলতায় ভারতের অবস্থান ও পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, প্রতিবেশি দেশে চলমান সহিংসতার ঘটনায় সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নাজুক হয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অবৈধ অভিবাসনের ওপর নজর রাখছে এবং বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয় ও সংখ্যালঘুদের নিয়েও উদ্বেগে রয়েছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে দিল্লি।
এর আগে, মঙ্গলবার ভারতের লোকসভায় দেওয়া এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয় নাগরিক বসবাস করছেন; যাদের মধ্যে প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী। হাইকমিশনের পরামর্শে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী জুলাই মাসেই ভারতে ফিরেছে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় আমাদের কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিকদের সাথে ঘনিষ্ঠ এবং নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ করছে। তিনি বলেন, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণ করছে।
বাংলাদেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিবেশি বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা সম্পর্কে জয়শঙ্করের সাথে কথা বলেছেন। তবে হাসিনার সঙ্গে মোদি দেখা করবেন কি না সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে কোনও তথ্য জানানো হয়নি।
গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সোমবার শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ভারতে যান তিনি। বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, শেখ হাসিনা লন্ডনে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এমনকি তার লন্ডন যাত্রার জন্য বিমানে জ্বালানিও ভরা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের দেওয়া এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে জটিলতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এনডিটিভিবিডি/০৬আগস্ট/এএ