ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৫

বুয়েটে রাজনীতি ‘ফেরানোর চেষ্টা’ : ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বীসহ আজীবন বহিষ্কার যারা

ফেব্রুয়ারী ০৫, ২০২৫
শিক্ষা
বুয়েটে রাজনীতি ‘ফেরানোর চেষ্টা’ : ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বীসহ আজীবন বহিষ্কার যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে আবরার ফাহাদ হত্যার পর থেকে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। গত বছরের ২৮ মার্চ রাতে ক্যাম্পাসে হঠাৎ ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় রাজনীতি ফেরাতে সরব হন সংগঠনটির কয়েকজন নেতাকর্মী। তার মধ্যে অন্যতম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বী।

বুয়েটে ছাত্রলীগ নেতাদের সমাগম ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির দায়ে তাকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার সঙ্গে আরও ৭ জনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
বহিষ্কৃত অন্য ৭ জন হলেন, পুরকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের তানভীর মাহমুদ স্বপ্নীল, মিশু দত্ত চাঁদ, কেমিকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের অরিত্র ঘোষ, সাগর বিশ্বাস জয়, আশিক আলম ও আসগর দাস এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৯তম ব্যাচের আসিফ আল জাবের।

বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ বলেন, বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ। শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা গত মার্চে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় রাজনীতি ফেরানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বুয়েটের অর্ডিন্যান্সের বিভিন্ন ধারা ভঙ্গ করার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা ৪১টি মিটিং করেন। এরপর উপাচার্যকে প্রতিবেদন দেন। সেখানে কিছু সুপারিশ করা হয়। সেটি শৃঙ্খলা কমিটিতে উত্থাপন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

৫২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি-সতর্ক : ৮ জনকে আজীবন বহিষ্কার ছাড়াও আরও ৫২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ও শাস্তিমূলক সতর্ক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ছয় থেকে চার টার্মের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

৭ জনকে আবাসিক হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা বাইরে থেকে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবেন। ৬ জনকে দুই টার্ম বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাদের এ শাস্তি স্থগিত থাকবে। তারা স্বাভাবিকভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবেন।
তবে পরবর্তীতে তারা যদি আবারও বুয়েটের অর্ডিন্যান্সের কোনো ধারা লঙ্ঘন করেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে এ শাস্তি অর্থাৎ, দুই টার্ম বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে। বাকি ২৭ জনকে ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ হিসেবে ‘সতর্ক’করা হয়েছে।

এদিকে, আজীবন বহিষ্কৃত ৮ জন এবং বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি পাওয়া এবং সতর্কবার্তা পাওয়া ৫২ জনের প্রত্যেকে কোনো না কোনোভাবে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন শহীদ আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে আবরার ফাইয়াজ লেখেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে প্রকাশ্যে বা গোপনে যুক্ত থাকা, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিডিয়ায় মিথ্যা ইন্টারভিউ দেওয়া, ক্যাম্পাসের নিরাপদ পরিবেশ নষ্টের চেষ্টা করেছে এমন বুয়েটের ৮ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার, ১২ জনকে ৬-৪ টার্ম বহিষ্কার, ৬ জনকে ২ টার্ম এবং ৩৪ জনকে ওয়ার্নিং ও হল বহিষ্কার করা হয়েছে আজ। অর্থাৎ, মোট ৬০ জনকে প্রায় ৫ মাস তদন্তের পরে শাস্তি দেওয়া হলো’

তিনি আরও লেখেন, ‘মূলত গত বছরের এপ্রিল থেকে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালুর যে চেষ্টা হয়েছিল, এরা তার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। ভবিষ্যতে যারা পুনরায় একই ধরনের চেষ্টা করার কথা ভাবছেন, আশা করি ফলাফল কেমন হতে পারে তা স্মরণে রেখে নিজেকে বিরত রাখবেন।’

এনডিটিভিবিডি/০৫ফেব্রুয়ারি/এএ

 

সর্বশেষ সংবাদ