নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) নিহত প্রবাসী মনির হোসেনের বড় ভাই নুরুল আমিন মানিক বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এই ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় থানা পুলিশ এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, নিহতের বড় ভাই এজাহার দায়ের করেছেন। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এজাহারে মামলার বাদী নুরুল আমিন মানিক জানান, নিহত মনিরের কেরানীগঞ্জের বাসার কেয়ারটেকার হিসেবে ছিলেন তার চাচাতো চাচা মো. রফিকুল ইসলাম। বেশ কিছুদিন আগে মনিরের সঙ্গে রফিকুল ইসলামের জমি-জমা ও বাড়ির টাকা-পয়সার হিসাব নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হয়। মনিরের সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পনা করে খাবারের সঙ্গে বিষ বা বিষজাতীয় পদার্থ মিশিয়ে অথবা অন্য কোনো উপায়ে মনির, তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার স্বপ্না ও তাদের প্রতিবন্ধী ছেলে নাইম হোসেন আরাফাতকে হত্যা করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত ২৮ জুন মনির তার ছেলে নাইম হোসেন আরাফাতকে রাজধানীর মগবাজারে এসপিআরসি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য চাচা রফিকুল ইসলামকে জানিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে রফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে ওই হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকের সিরিয়াল না পাওয়ায় একইদিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মগবাজার সুইট স্লিপ আবাসিক হোটেলের ১০৩ নম্বর রুমে ওঠেন। ওই সময় তাদের সঙ্গে রফিকুল ইসলামও ছিলেন। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে মগবাজার মোড়ের ভর্তা-ভাত রেস্তোরাঁয় রফিকুলের সঙ্গে খাবার খেতে যান মনির। খাবার খেয়ে মনির হোটেলে চলে আসেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মনিরের স্ত্রী ও ভাতিজা নাইম হোসেনের জন্য একই রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে হোটেলে নিয়ে আসেন রফিকুল ইসলাম। এরপর রফিকুল কেরানীগঞ্জের বাসায় চলে যান। রাতে মনির, তার স্ত্রী ও ছেলে রফিকুলের রেখে যাওয়া খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সবাই একসঙ্গে বমি করতে থাকেন।
পরদিন ২৯ জুন সকাল ৬টার দিকে অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি চাচা রফিকুলকে জানান মনির। সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে হোটেলে আসেন রফিকুল। পরে তাদের এক এক করে চিকিৎসার জন্য আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে মনির হোসেন, স্ত্রী নাসরিন আক্তার স্বপ্না ও তাদের সন্তান নাইম হোসেনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পনা করে হোটেলে অবস্থানকালীন খাবারের সঙ্গে বিষ বা বিষজাতীয় পদার্থ মিশিয়ে অথবা অন্য কোনো উপায়ে মনির ও তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে।
এনডিটিভিবিডি/০১জুলাই/এএ