ঢাকা , রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

ব্যাংকে টাকা আনতেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ: প্রধানমন্ত্রী

Jun ০৭, ২০২৪
অর্থনীতি
ব্যাংকে টাকা আনতেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যাংকে টাকা আনতেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি সংকটের মধ্যে বাজেট দিতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির ধাক্কা এখনো আছে। উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। আমরা তো কোন সাং...? তারপরও আমরা বাজেট দিতে পারলাম। অনেকে হিসাব করেন, আগে এত শতাংশ বাড়ছে, এখন কম বাড়ছে কেন? আমরা এখন সীমিতভাবে খুব সংরক্ষিতভাবে এগুতে চাই। যাতে আমাদের দেশের মানুষের কষ্ট না হয়। মানুষের প্রয়োজন মিটাতে চাই, এর প্রতি লক্ষ্য রেখেই বাজেট করেছি।

তিনি আরও বলেন, এখন মূল্যস্ফীতি বেশি। তবে অবাক কাণ্ড, আমাদের উৎপাদন বেড়েছে, মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বেড়েছে, খাবার গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। এখন তো দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে হচ্ছে না। দুবেলা তো খাবার পাচ্ছে মানুষ। কোথাও কোথাও বেশিও পায়। সেখানে খাদ্য গ্রহণ বেড়েছে, চাহিদা বেড়েছে। আমরা উৎপাদনও বাড়াচ্ছি। তারপরও মূল্যস্ফীতির কারণে সীমিত আয়ের লোকদের কষ্ট হচ্ছে। তাই তাদের পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। সেখানে ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল-তেলসহ যখন যেটা প্রয়োজন দিতে পারবো। যারা একবারেই হতদরিদ্র্য তাদের বিনাপয়সায় খাবার দিচ্ছি। প্রায় ১৫০টি সামাজিক নিরাপত্তার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তাও দিচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, বাজেট অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দিয়েছি। তারপরও কারো ভালো লাগবে না। এটা তো আছেই। বাজেট ঘাটতি নিয়ে অনেকে কথা বলেন। আমরা বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে রাখি। এবারও ৪ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে রাখা হয়েছে। পৃথিবীর বহুদেশ, এমনকি উন্নত দেশেও এর থেকে বেশি বাজেট ঘাটতি থাকে। সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ খাদ্যমূল্য ঠিক রাখা। উৎপাদন বাড়ানো এবং সরবরাহ ঠিক রাখতে পারলে খাবারের কখনো অভাব হবে না। নিজেরা যদি উদ্যোগী হই, উৎপাদনে মনোযোগী হই। তাহলে আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবো।

আমাদের তেলমারা গোষ্ঠীর দরকার নেই
সমালোচনাকারীদের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের কিছু ভালো লাগে না গ্রুপ আছে, তাদের ভালো লাগে না-ই থাক। ওদিকে কান দেওয়ার দরকার নাই। কারণ, এটা যুগ যুগ ধরে আমি দেখি। এটা নতুন না। যখন কোনো অস্বাভাবিক সরকার আসে। তখন তারা খুব খুশি হয়। তাদের গুরুত্ব থাকে। আওয়ামী লীগ থাকলে না কি তাদের কিছু হয় না, মূল্যায়ন হয় না। মূল্যায়নটা কীভাবে করবো? দাঁড়িপাল্লায় উঠাবো? মূল্যায়ন তো দেখেছি, তত্ত্বাবধায়ক আমলে কীভাবে তারা তেল দেয়। আমাদের তো তেলমারা গোষ্ঠীর দরকার নেই। জনগণ আমাদের শক্তি। জনগণ আমাদের ভোট দেয়, আমরা জনগণের জন্য কাজ করি, তাদের কল্যাণ হয়। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেভাবেই প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নেই, যাতে মানুষের কষ্ট না হয়।

টাকা ব্যাংকে আনতে কালো টাকা সাদার সুযোগ

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন এক কাঠা জমি যার, সেই কোটিপতি। কিন্তু সরকারি হিসাবে তারা বেচে না। বেশি দামে বেচে। কিছু টাকা উদ্বৃত্ত হয়। এই টাকাটা তারা গুজে রাখে। এই টাকা গুজে না রেখে সামান্য কিছু কর দিয়ে জায়গা মতো আসুক। পথে আসুক। তারপর তো কর দিতেই হবে। আমি ঠাট্টা করে বলি, মাছ ধরতে হলে আধার (খাবার) দিতে হয়। আধার ছাড়া তো মাছ আসবে না। সেরকম একটা ব্যবস্থা এটা। এটা আগেও ছিল। প্রত্যেক সরকার করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও করেছে। আমরাও সুযোগ দিয়েছি। যাতে টাকাটা ব্যাংকে নিয়ে আসে।
করোনা মহামারির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সেসময় রিজার্ভ কত আছে বিবেচ্য না, মানুষকে খাওয়াতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য করে পানির মতো টাকা খরচ করেছি। বিনাপয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি, মানুষ বাঁচাতে। চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি। এভাবে পানির মতো টাকা খরচ করেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আজকের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম পর্যন্ত মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে উন্নীত করেছি। আওয়ামী লীগ সরকারে এলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। এটা প্রমাণ করেছি।

আমাদের দেশে অনেক আঁতেল আছে
৭০ এর নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে অনেক আঁতেল আছে, তারা অনেক কিছু বেশি বুঝে। যখন নির্বাচন এলো, অনেকগুলো শর্ত ছিল। তারা বলছে, ভোটের বাক্সে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। আব্বা বলছিলেন, ভোটের বাক্সে লাথি মারলে হবে না। ভোট দিয়েই স্বাধীন হবে। আমি নির্বাচন করবো। নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলার মানুষের কে নেতৃত্ব দেবে, তা ঠিক হবে। তাই হয়েছিল।
এনডিটিভিবিডি/০৭জুন/এএ