নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসরকারি খাতের এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ পিএলসি বা এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একইসঙ্গে তিনজন শেয়ারহোল্ডারসহ ৫ পরিচালক নিয়োগ দিয়ে পরিচালনা পর্ষদের নতুন বোর্ড গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক এক আদেশে ব্যাংকটির পর্ষদ বাতিল করে।
এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পাঠানো আদেশে বলা হয়, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে।
একই আদেশে নতুন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে ব্যাংক-উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের হাত থেকে মুক্ত হলো এক্সিম ব্যাংক।
এতদিন নজরুল ইসলাম মজুমদার এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং তার স্ত্রী নাছরিন ইসলাম পরিচালক ছিলেন।
নতুন পর্ষদে পরিচালক হয়েছেন ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডার মো. নজরুল ইসলাম স্বপন, মো. নুরুল আমিন, অঞ্জন কুমার সাহা এবং স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এস এম রেজাউল করিম ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট খন্দকার মামুন। নতুন পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত পরিচালকদের মধ্যে শেয়ারহোল্ডার তিনজন আগেও ব্যাংকটির পরিচালক ছিলেন।
নজরুল ইসলাম মজুমদার ২০০৭ সাল থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি প্রায় দেড় দশক ধরে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সভাপতির দায়িত্বে আছেন।
নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান। পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত তিনি। গত ১৫ বছরে ব্যাংকগুলো থেকে চাঁদা তুলে শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়ার কারণে তিনি আলোচনায় ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে উদ্যোক্তাদের সুবিধা বাড়ানো ও নীতি পরিবর্তনে ভূমিকা রেখে আসছিলেন তিনি। সবশেষ ‘শেখ হাসিনা আন্তব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট’ নামে প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল বিএবি।
ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। সরকারের পতনের পর থেকে নজরুল ইসলাম মজুমদার গা-ঢাকা দিয়েছেন।
সম্প্রতি নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তার স্ত্রী নাছরিন ইসলামের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। হিসাব জব্দ করাদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব লেনদেন বন্ধ থাকবে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এ সময় বাড়ানো হবে। অ্যাকাউন্ট স্থগিত হওয়ার ফলে এখন থেকে তারা আর কোনো টাকা তুলতে পারবে না।
এনডিটিভিবিডি/২৯আগস্ট/এএ