ডেস্ক রিপোর্ট: গাজীপুরের শ্রীপুর রেল স্টেশনে বিকল হয়ে যাওয়া একটি ট্রেনের যাত্রীরা ট্রেন চালককে লাঞ্চিত ও স্টেশন মাস্টারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে জারিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বলাকা কমিউটার ট্রেনের যাত্রীরা শ্রীপুর রেল স্টেশনে এ ঘটনা ঘটায়। রাত ১০টা পর্যন্ত ট্রেনটি সেখানেই আটকা ছিল।
বলাকা কমিউটার ট্রেনের যাত্রী, প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের জারিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বলাকা কমিউটার ট্রেনটির ইঞ্জিন প্রথমে ময়মনসিংহের ফাতেমা নগর স্টেশনে বিকল হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় ট্রেনটি ওই স্টেশনে আটকে থাকে। পরে ময়মনসিংহ থেকে বিকল্প একটি ইঞ্জিন এনে ট্রেনটি সচল করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু গাজীপুর শ্রীপুর স্টেশনে প্রবেশের পূর্বে আউটার সিগনালের কাছে ট্রেনটির ইঞ্জিন ফের বিকল হয়ে পরে। এতে দুর্ভোগে পড়েন বলাকা কমিউটার ট্রেনের শত শত যাত্রী।
এ সময় ঢাকাগামী তিস্তা এক্সপ্রেস আসার খবর পেয়ে বলাকা ট্রেনের যাত্রীরা ট্রেনটি থামিয়ে তাদের ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে স্টেশন মাস্টারকে জোরাজুরি করেন। কিন্তু কর্তব্যরত স্টেশন মাষ্টার এতে রাজি না হওয়ায় বলাকা ট্রেনের যাত্রীরা রেল সড়কের উপর দাঁড়িয়ে অবরোধ তৈরী করে প্রথমে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন থামানোর চেষ্টা করেন। এতেও ট্রেনটি না থামায় ক্ষিপ্ত হয়ে বলাকা কমিউটার ট্রেনের যাত্রীরা উত্তেজিত চালককে লাঞ্চিত করেন। এক পর্যায়ে কর্তব্যরত স্টেশন মাষ্টারের কক্ষে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন তারা। এতে ব্যর্থ হয়ে স্টেশন মাষ্টারকে অবরুদ্ধ করেন তারা। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অবরুদ্ধ স্টেশন মাষ্টারকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শ্রীপুর স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার শামিমা জাহান বলেন, “বলাকা ট্রেনটি সন্ধ্যা ৬টা ৫৩ মিনিটে শ্রীপুর স্টেশনে প্রবেশ করলে ইঞ্জিন বিকল হয়। এর আগে ফাতেমা নগর স্টেশনে ওই ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়েছিল। ট্রেনের যাত্রীরা রাত ৮টা ২০ মিনিটের সময় ঢাকাগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে তাদের উঠিয়ে দিতে বলে। নিয়ম না থাকায় ট্রেনটি থামানো সম্ভব নয় বলে জানাই।”
“যাত্রীরা তখন রেললাইন অবরোধ করে ট্রেন থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর তারা বলাকা ট্রেনের চালককে লাঞ্চিত করে। স্টেশন মাষ্টারের কক্ষে হামলায় ব্যর্থ হয়ে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।”
স্টেশন মাষ্টার আরও বলেন, “বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন। তবে বিকল ট্রেনটি সচল করতে ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে বিকল্প ইঞ্জিন এসেছে। রাত ১১টার মধ্যেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে।”
শ্রীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, খবর পেয়ে স্টেশনে পুলিশ পাঠানো হয়। স্টেশনের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।