নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। একই সঙ্গে তিনি ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে যে গণআকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তার চূড়ান্ত বিজয় রুখতেও তৎপর বলে উল্লেখ করেছে ছাত্রসংগঠনটি।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে সই করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাগীব নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি।
বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গণহত্যাকারী আওয়ামী সরকারের পতন নিশ্চিত হয়েছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও পলায়নের মধ্য দিয়ে জনগণের যে রক্তক্ষয়ী বিজয় অর্জিত হয়েছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ করতে স্বৈরাচারের দোসররা এখনো সক্রিয়।
‘রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর এবং গণআকাঙ্ক্ষার চূড়ান্ত বিজয় রুখতে তিনি তৎপর। রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়ার কোনো স্তরেই থাকার যোগ্যতা তার নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের উপস্থিতিতে গণঅভ্যুত্থানকারী জনতার কাছে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে পদত্যাগ করতে হবে।’
ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বলেন, রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হওয়ার পর সেই শূন্যতাকে স্বৈরাচারের দোসররা যেন কাজে লাগাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ কর্মপন্থায় পৌঁছাতে হবে। সর্বোপরি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়া জারি রাখতে হবে। সে লক্ষ্যেই অন্তর্র্বতী সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সর্বদলীয় ছায়া সরকার গঠনের প্রস্তাব করছে।
‘ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে, রূপান্তরের রূপরেখা আমলে না নেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় না হাঁটার ফলেই অন্তর্র্বতী সরকার একের পর এক সংকটের মুখে পড়ছে। আমরা মনে করি, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর অংশীজনদের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে সর্বদলীয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিকসহ নাগরিকদের নেতৃত্বে একটি ছায়া সরকার গঠন করা জরুরি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ছায়া সরকার রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর নির্বিঘ্নকরণ ও ফ্যাসিবাদের সব অ্যাপারেটাস নিষ্ক্রিয় করতে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি তারা বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের কর্মপদ্ধতির জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, যেন দেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয়। সংস্কার কমিশনসমূহের প্রস্তাব গণতান্ত্রিক হয় এবং এ গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত দাবি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে পতিত স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া দোসর ও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর পুরোপুরি বিলোপ ছাড়া রিপাবলিককে প্রোক্লেইম করা সম্ভব নয়। প্রোক্লেমেশন অব দ্য রিপাবলিক সংঘটিত করতে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য এবং অন্তর্র্বতী ও ছায়া সরকারের দ্বান্দিক চর্চার কোনো বিকল্প নেই বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি ও সম্পাদক।
এনডিটিভিবিডি/২৩অক্টোবর/এএ