নিজস্ব প্রতিবেদক : গঙ্গা ও পদ্মা অববাহিকায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। আগামী দুই দিন ওই দুই অববাহিকায় পানি আরও বাড়তে পারে। ফলে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের নিম্নাঞ্চল ও চরগুলো প্লাবিত হতে পারে। আগামী তিন দিনের মাথায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে। এতে আবারও চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টি বাড়তে পারে। একই সঙ্গে ওই দুই এলাকার নদ–নদীর পানি বাড়তে পারে। এতে শুধু এসব এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। সামনে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, বর্ষার আমেজ বিদায় নিতে আরও সপ্তাহ দুয়েক লাগবে। এ সময়ে সাধারণত বৃষ্টি বেড়ে যায়। এমনিতেই দেশের নদ–নদীগুলোতে পানি বেশি। ফলে নতুন করে পানি বাড়তে পারে।
বন্যাবিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত আগস্ট মাসের বন্যার পানি এখনো দেশের অনেক জায়গা থেকে নামেনি। এ ছাড়া যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা, পটুয়াখালী ও কক্সবাজারের অনেক স্থানে পানি আটকে আছে। অনেকটা জলাবদ্ধতার মতো পানি জমে আছে। ওই পানি নামতে দেরি হচ্ছে। এ ধরনের জলাবদ্ধতা সেপ্টেম্বর মাসের বাকি সময়জুড়ে থাকতে পারে।
আগামী চার দিন রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বাড়তে পারে। তবে পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচে থাকতে পারে। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ১১৬টি পয়েন্টের মধ্যে ২৪টিতে পানি বাড়ছে ও বাকিগুলোতে কমছে।
একদিকে বঙ্গোপসাগরে একের পর এক লঘুচাপ, অন্যদিকে উজান থেকে আসা ঢলের কারণে এ সময়ে নদীর পানি যে পরিমাণে কমার কথা তা কমেনি। অন্যদিকে পানি নামার রাস্তা কম থাকায় এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। বর্ষার পুরো সময় ওই জলাবদ্ধতা থাকতে পারে।
খুলনা বিভাগে হঠাৎ বৃষ্টি বেড়ে গেছে। উজানে ভারতের গঙ্গা অববাহিকায় বৃষ্টি বেড়েছে। ওই বৃষ্টির পানি ঢল আকারে আসায় বাংলাদেশের গঙ্গা ও পদ্মা অববাহিকায় পানি বেড়ে গেছে। আগামী দুই দিন ওই দুটি নদী অববাহিকার পানি আধা মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। তবে ওই পানি বৃদ্ধির কারণে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে যাবে না বলে জানিয়েছে বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া সংস্থাটি।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সর্দার উদয় রায়হান বলেন, আগামী কয়েক দিন রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের নদ–নদীর পানি ধারাবাহিকভাবে কমে আসতে পারে। তবে আগামী চার দিন রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বাড়তে পারে। তবে পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচে থাকতে পারে। দেশের বিভিন্ন নদ–নদীর ১১৬টি পয়েন্টের মধ্যে ২৪টিতে পানি বাড়ছে ও বাকিগুলোতে কমছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। বাকি এলাকাগুলোতে বৃষ্টি কমেছে। ঢাকায় গতকাল মাত্র ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় সারা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামীকাল সারা দেশের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। আগামী দুই দিনের মধ্যে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার পর তাপমাত্রা আবারও কমতে শুরু করবে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বাংলা ঋতুর হিসাবে শরৎ শুরু হয়েছে; বর্ষাকাল বিদায় নিয়েছে। তবে আবহাওয়াবিদদের হিসাবে বর্ষাকাল বিদায় নেয় বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে মৌসুমি বায়ু চলে যাওয়ার পর। আগামী অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি বিদায় নেবে। তারপর ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। নভেম্বর থেকে শীতকাল আসতে শুরু করবে।
এনডিটিভিবিডি/১৮সেপ্টেম্বর/এএ