ঢাকা , বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২৫

গণশিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় শিক্ষক নেতাকে শোকজ

ফেব্রুয়ারী ০৪, ২০২৫
শিক্ষা
গণশিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় শিক্ষক নেতাকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘শিক্ষকতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যানৃ’ বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তার এ বক্তব্যে শিক্ষকদের হেয় করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানান প্রাথমিক শিক্ষকরা। পাশাপাশি উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও তোলেন তারা।

সেসময় উপদেষ্টার বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে পদত্যাগের দাবি করেছিলেন জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও দশম গ্রেড বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক মো. মাহবুবর রহমান। এ নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে বক্তব্যও দেন তিনি।
এ ঘটনায় ওই সহকারী শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলামের সই করা নোটিশে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষক মাহবুবর রহমান তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে তা লাইভ করেন। এ ধরনের পোস্টে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের পোস্ট করায় সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্ন হওয়ার বিষয়টি ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা-২০১৯-এর ৭(ঘ) এবং ১০(ঙ), (ছ) (পরিমার্জিত সংস্করণ) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর পরিপন্থি।

‘এ অবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার জবাব পত্রপ্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।’

নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী শিক্ষক মাহবুবর রহমান। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট বিদায় হয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিস্টদের করা কালাকানুন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা -২০১৯ আইন এখনো বিদ্যমান। এ আইনের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। এ আইনটি শিগগির পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ২৪ জানুয়ারি ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেছিলাম। সেখান থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে মার্চ ফর টেনথ গ্রেড কর্মসূচি থেকে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর পরপরই উপদেষ্টা বক্তব্য দেন যে, ‘শিক্ষকতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান’। এতে সব শিক্ষকের মতো আমিও হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছিলাম। বিভাগীয় মামলা, শোকজ দিয়ে যতই ভয়-ভীতি দেখানো হোক না কেন, আমরা দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

বিষয়টি নিয়ে জানতে জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনডিটিভিবিডি/০৪ফেব্রুয়ারি/এএ