ডেস্ক রিপোর্ট: ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী স্থলবন্দর দিয়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে ভারতীয় কয়লা আমদানি শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুই বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের স্থবিরতা নিরসন হয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে দুই স্থলবন্দর দিয়ে ৮ ট্রাক কয়লা বাংলাদেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হয় কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ স্থলবন্দর কড়ইতলী-গোবরাকুড়া বন্দরের সহকারী পরিচালক পার্থ ঘোষ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ভারতীয় কয়লা ইন্দোনেশিয়ার কয়লার চেয়ে ভালো মানের। ফলে দামও ইন্দোনেশিয়ার কয়লার চেয়ে বেশি। ইন্দোনেশিয়া থেকে কম দামে দেশে কয়লা আমদানি হওয়ায় হালুয়াঘাটের ব্যবসায়ীরা ভারতীয় কয়লা আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। ফলে সর্বশেষ চলতি বছরের এপ্রিলে ভারত থেকে মাত্র ৯৬৪ টন কয়লা আমদানির পর আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এরপর থেকে বন্দরে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। কিন্তু বতর্মানে কয়লার পুরোপুরি মৌসুম চলছে। প্রচুর কয়লা বিক্রি হবে এমন আশায় মোট ৯৬ টন ভারতীয় কয়লা আমদানি করা হয়েছে।
পার্থ ঘোষ আরও বলেন, আবারও কয়লা আমদানির মাধ্যমে বন্দরের স্থবিরতা নিরসন হয়েছে। ব্যসায়ীরা চাইলে আমদানি ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর ভারত থেকে ২২ হাজার টাকায় প্রতি টন কয়লা কেনা হয়েছে। অথচ ইন্দোনেশিয়ার কয়লা ১৬ হাজার ৫০০ টাকায় কিনেছেন বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা। চড়া দামের কারণে হালুয়াঘাটের কয়লা ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ করে দেয়। এরপর গত বছর একবার কয়লা আমদানি হলেও আর আনা হয়নি। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দুই বন্দরকেন্দ্রিক সাড়ে ৪ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যান।
কড়ইতলী-গোবরাকুড়া আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার অপু বলেন, দীর্ঘদিন কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীসহ শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখন কয়লার ভালো মৌসুম চলছে। ভারতীয় কয়লার দাম কমেনি। তবুও অনেক ক্রেতা পাওয়া যাবে এবং লাভের আশায় কয়লা আমদানি শুরু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, লাভ না হলে কয়লা আমদানি আবারও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে এমনটি আমরা কখনোই চাই না।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে কড়ইতলী ও ১৯৯৭ সালে গোবরাকুড়া শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আমদানি শুরু হয়। স্থলবন্দর দুটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু ভারতীয় রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীদের অন্তর্কোন্দল এবং ভারতীয় পরিবেশবাদীদের মামলায় দেশটি থেকে কয়লা রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এতে কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া স্থলবন্দরে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩৬০ ব্যবসায়ীর ৩৭২টি এলসির বিপরীতে ভারতে ৩৯ হাজার টন কয়লা আটকে যায়। গত বছরের ১১ মার্চ বন্দর দুটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর ঘোষণা করা হয়।
এনডিটিভি/এলএ