নিজস্ব প্রতিবেদক : জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচা-গলা লাশ উদ্ধার হওয়ার কয়েকদিন পর অবশেষে তার পরিবার করাচিতে এসে তা গ্রহণ করেছে। লাশটি তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে পচাগলা অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার পর হিমঘরে সংরক্ষিত ছিল। একই সঙ্গে বেশ কয়েকদিন ধরে তার পরিবারের সদস্যরা তার লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল।
মিডিয়া ও জনসাধারণের তীব্র সমালোচনার মধ্যে হুমাইরার পরিবার অবশেষে করাচিতে পৌঁছে তার লাশ গ্রহণ করল।
করাচির এসএসপি (দক্ষিণ) অফিসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় হুমাইরার ভাই নাবিদ আসগর জানান, সংবাদমাধ্যমে যে দাবি করা হয়েছে যে, পরিবার তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল, তা পুরোপুরি সত্য নয়।
‘ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে যে আমরা ওকে (হুমাইরা) ত্যাগ করেছিলাম বা তার লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলাম। সেটা সঠিক নয়,’ বলেন নাবিদ।
তিনি আরও জানান, গত তিন দিন ধরে তারা পুলিশের সঙ্গে এবং ছিপ্পা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন।
নাবিদ আসগর বলেন, ‘যেহেতু লাশ পুলিশের হেফাজতে ছিল, তাই আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হলে হস্তান্তর সম্ভব ছিল না’।
‘আমরা এখন ছিপ্পার সঙ্গে যোগাযোগ করে লাশ বুঝে নিয়েছি’, যোগ করেন তিনি।
নাবিদ ব্যাখ্যা করে জানান, গত ছয় মাস ধরে হুমাইরার ফোন বন্ধ ছিল এবং তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কারণ তিনি প্রায়ই ভ্রমণে থাকতেন।
অভিনেত্রীর ভাই বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমাদের ছয় মাস কোনো যোগাযোগ ছিল না, কিন্তু তাই বলে আমরা চিন্তিত ছিলাম না—এটা ঠিক নয়।সম্প্রতি আমাদের এক চাচি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।এতে বাবা-মা মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত ছিলেন।’
‘হুমাইরার মৃত্যুর পর হঠাৎ করে মিডিয়া থেকে ফোন আসা পরিবারের জন্য ছিল এক মানসিক ঝড়ের মতো অভিজ্ঞতা,’ বলেন নাবিদ।
এর আগে এসএসপি (দক্ষিণ) মাহজুর আলী সাংবাদিকদের জানান, লাশ হস্তান্তরের জন্য আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, ‘তার ভাই ও ভগ্নিপতি করাচিতে এসেছেন। তারা লাশ লাহোরে নিয়ে গিয়ে দাফন করার পরিকল্পনা করছেন’।
মাহজুর আলী আরও জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সন্দেহের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি এবং তারা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
পুলিশ বলছে, হুমায়রার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে বন্ধ ছিল।
মাহজুর আলী বলেন, ‘ওই সময় থেকে অভিনেত্রীর ফ্ল্যাটের কোনো ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়নি। ঘরের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ওই সময়েই তার মৃত্যু হয়েছে’।
তিনি আরও জানান, হুমায়রার ফ্ল্যাটের পাশের ফ্ল্যাটও খালি ছিল, কারণ এর বাসিন্দারা বিদেশে ছিলেন এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিরেছেন।
‘এ কারণে পচা গন্ধ কেউ টের পায়নি,’ — বলেন এসএসপি।
তিনি জানান, ‘হুমায়রার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল অনিয়মিত। সাধারণত তিনি নিজেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। তবে গত ছয় মাস ধরে কোনো যোগাযোগ ছিল না তাদের।’
এনডিটিভিবিডি/১১জুলাই/এএ