ঢাকা , বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফরিদপুরে দুই ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২৫
বাংলাদেশ
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফরিদপুরে দুই ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

ডেস্ক রিপোর্ট: ফরিদপুরের নগরকান্দায় যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযান অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে। তাদের একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা। অপরজন আওয়ামী লীগের কর্মী।

গ্রেপ্তার ভবুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাজী আবুল কালাম (৬১) উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। আর দফা গ্রামের বাসিন্দা মো. আতাউর রহমান (৪৮) পুরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তার আওয়ামী লীগে কোনো পদ নেই। তবে সাবেক সংসদ সদস্য শাহদাব আকবরের ছত্রছায়ায় আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িত হয়ে এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দফা ও ডাঙ্গী গ্রামে ওই দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, তাদের নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তাদের আদালতে পাঠানো হবে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১– টানা তিনবারের চেয়ারম্যান। প্রথমবার প্রয়াত সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বড় ছেলে আয়মন আকবর চৌধুরীর আশীর্বাদে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে ফল কারচুপির অভিযোগ এনেছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সরদার সাইফুজ্জামান। পরের দুবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, কাজী আবুল কালাম ‘কাজী গ্রুপ’ নামে স্থানীয় সদস্যদের তৈরি একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিতেন। এ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কালামের স্থানীয় আধিপত্য বজায় রাখতে ব্যবহৃত হতো। কাজী আবুল কালাম এ গ্রুপের মাধ্যমে তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদারের ছোট ভাই সাইফুজ্জামান সরদার, আবার কখনো মুরাদ হোসেনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতেন। এ ছাড়া তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর ডাঙ্গী গ্রাম থেকে সরিয়ে এনে নিজ গ্রাম ভবুকদিয়ায় অস্থায়ী ইউপি কার্যালয় স্থাপন করেন।

এদিকে, ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত পুরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন আতাউর। তবে নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য শাহদাব আকবরের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এরপর থেকে তিনি ‘আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান’ হিসেবে মর্যাদা পাওয়া শুরু করেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ইউপি সদস্যরা টিআর, কাবিখা, কাবিটা, উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা, হাটবাজার, এডিবিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন। তার স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল তার পরিষদের ১২ জন ইউপি সদস্যদের মধ্যে আটজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুগ্রহে এ অভিযোগেও কিছুই হয়নি তার।