ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪

শ্রীলংকার বিপক্ষে কাল প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ

মার্চ ২১, ২০২৪
খেলাধুলা
শ্রীলংকার বিপক্ষে কাল প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ

বড় ফরম্যাটে উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আগামীকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের  টেস্ট সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১০টায়।
টেস্টে শুরু আগে ইতোমধ্যে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। সফরকারীরা ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি জিতলেও একই ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিক টাইগাররা।
২০২২ সালে ভারতের কাছে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর  ২০২৩ সালে কোন টেস্ট সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে নিজেদের প্রথম টেস্ট সিরিজে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুন্ন রাখতে চাইবে  টাইগাররা।
গেল বছর ঘরের মাঠে খেলা তিন সিরিজের মধ্যে দু’টিতে জয় পায় বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচ টেস্ট সিরিজে জয় পেলেও, শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে টাইগাররা।
সর্বশেষ সিরিজগুলোর ফল বিশ্লেষনে  স্পস্টতই টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতির চিত্র ফুটে উঠেছে। শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজটিই হবে  নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্তর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট।
গেল বছর ঘরের মাঠে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শান্তর  অধীনে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ।
নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে তিন ফরম্যাটে দায়িত্ব নেওয়ার পর টেস্ট ফরম্যাটে দেশের বাইরে  প্রতিপক্ষের সাথে সমানতালে লড়াই করা এবং ঘরের মাঠে যতটা সম্ভব ম্যাচ জয়ের লক্ষ্য স্থির করেন শান্ত।
ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে কখনও টেস্ট জিততে পারেনি টাইগাররা। তাই স্বাভাবিকভাবেই  এবার  শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথমবারের মত টেস্ট জয়ের জন্য নিজেদের সেরাটা উজার করে দিবে বাংলাদেশ।
এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে ২৪টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা। ২০১৭ সালে কলম্বোতে নিজেদের শততম টেস্টে লংকানদের বিপক্ষে প্রথম ও শেষ জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। অবিস্মরনীয় ঐ টেস্ট জয়ের দুই নায়ক সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালকে কালকের ম্যাচে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। চোে সমস্যার কারণে আগেই সিরিজ থেকে সরে গেছেন সাকিব। আর তামিমের আন্তর্জাতিক ভবিষ্যত প্রায় শেষের দিকে।
একমাত্র জয়ের সাথে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৮টিতে হার এবং পাঁচটি টেস্ট ড্র করেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে ১০ বার মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। এরমধ্যে শ্রীলংকা জয় ৭টিতে এবং বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়।
এজন্য ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে জয় খরা  ঘোচানোর পালা বাংলাদেশের। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের তার ুণ্য নির্ভর  দলটির জন্য কাজটি বেশ  কঠিনই হবে। বুড়ো আঙ্গুলের ইনজুরিতে সিনিয়র খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিমকে শেষ মুর্হূতে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতি এবং টেস্ট থেকে আগেই অবসর নেওয়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ না থাকায় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে প্রধান বড় ভরসা ছিলেন মুশফিক। ওয়ানডেতে বিপর্যয়ের মুখ থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করে নিজের সেরা পারফরমেন্স দিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন মুশফিক। তার অভিজ্ঞতা টেস্ট সিরিজেও বড় ভূমিকা রাখতে পারতো।
মুশফিকের জায়গায় টেস্ট দলে নেওয়া হয়েছে সাদা বলের ক্রিকেটে নিজের যোগ্যতার প্রমান দেওয়া তাওহিদ হৃদয়কে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে তরুণদের চেয়ে অভিজ্ঞতা অনেক বেশি প্রয়োজন। মুশফিকুরের শূন্যস্থান হৃদয় কিভাবে পূরণ করতে পারেন, সেটিই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ টেস্ট দলে নতুন মুখ হিসেবে আছেন এই মুহুর্তে দেশের দ্রুততম  পেসার হিসেবে  পরিচিত পাওয়া নাহিদ রানা। তিনি বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটারের গতির বোলিং করতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
চারজন পেসার নিয়ে বাংলাদেশ দল সাজানোয়  ধারনা করা হচ্ছে সিলেটের উইকেট পেস সহায়ক হবে । অন্যদিকে, দলে সেরা মানের স্পিনারদেরই রেখেছে শ্রীলংকা। কিন্তু সফরকারীদের শক্তির জায়গাকে কাজে লাগাতে দিবে না বাংলাদেশ। গত দুই সফরে বাংলাদেশকে বেকাদায় ফেলেছিলো শ্রীলংকার স্পিনাররা।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম, লিটন দাস, মোমিনুল হক, তাওহিদ হৃদয়, শাহাদাত হোসেন দিপু, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ. মুশফিক হাসান, নাহিদ রানা।
শ্রীলংকা দল : ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (অধিনায়ক), কুসল মেন্ডিস (সহ-অধিনায়ক), দিমুথ করুনারতেœ, নিশান মাদুশকা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, দিনেশ চান্দিমাল, সাদিরা সামারাবিক্রমা, কামিন্দু মেন্ডিস, লাহিরু উদারা, প্রবাথ জয়সুরিয়া, রমেশ মেন্ডিস, নিশান পেইরিস, কাসুন রাজিথা, বিশ্ব ফার্নান্দো, লাহিরু কুমারা ও চামিকা গুনাসেকারা।