ঢাকা , বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫

স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ

ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২৫
বাংলাদেশ
স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ

ডেস্ক রিপোর্ট: বরগুনায় আসমা আক্তার পুতুল (৩০) নামে এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন স্বামী মো. আবুল কালাম (৩৫)।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে বরগুনা পৌরসভার সরকারি কলেজের মহিলা হোস্টেল সংলগ্ন বাগান বাড়ি নামক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত আসমা আক্তার উপজেলার চান্দখালী এলাকার বকুলতলী এলাকার মো. ইউনুসের মেয়ে। তিনি পূবালী ব্যাংকের বরগুনা শাখার পরিচ্ছন্নতা কর্মী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান।

পুলিশ জানায়, বরগুনা পৌরসভার শহিদ স্মৃতি সড়ক বরিয়ালপাড়া নামক এলাকার বাসিন্দা আব্দুল করিম আকনের ছেলে আবুল কালাম স্ত্রী, এক ছোলে ও এক মেয়ে নিয়ে পৌরসভার সরকারি কলেজের মহিলা হোস্টেল সংলগ্ন বাগান বাড়ি নামক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। কালাম পেশায় একজন চা দোকানি। স্ত্রী আসমা আক্তারকে ব্যাংকের চাকরি পাইয়ে দিতে তিনি টাকা পয়সা খরচ করেন। পরে তার চাকরি হলে বেতনের টাকা স্বামীকে দিতে রাজি হয়নি স্ত্রী আসমা আক্তার। বিষয়টি নিয়ে কালামের সঙ্গে প্রায় সময়ই মনোমালিন্য হত স্বামী-স্ত্রীর। পরে রোববার রাত ৮ টার দিকে নিজ বাসায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে আহত করে ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায় কালাম। স্থানীয় ও প্রতিবেশীদের খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আসমা আক্তারকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরই বরগুনা সদর থানায় আত্মসমর্পণ করেন আবুল কালাম।

কালামের বাড়ির মালিক মো. রাসেল বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে কালাম তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে আমার বাসায় ভাড়া থাকতেন। আমি তাদের মধ্যে কোনো ধরনের পারিবারিক কলহ দেখতে পাইনি। এমনকি প্রতিবেশী যারা আছে তারাও দেখেনি। রাতে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে বাসায় এসে দেখি আসমা আক্তারকে মেরে আহত করে ঘর থেকে কালাম চলে গেছে। পরে ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানাই এবং হাসপাতালে ফোন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আসতে বলি। পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতে আসমা আক্তারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, আবুল কালাম নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় আসমা আক্তারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আটক আবুল কালামকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানতে আবুল কালামকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত চলমান রয়েছে। 

এ বিষয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম বলেন, স্ত্রীর চাকরির বেতন না দেওয়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ঘাতক স্বামী আবুল কালাম বর্তমানে ট্রমা টাইজ অবস্থায় থাকায় এই মুহূর্তে বেশি কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না।