ঢাকা , রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা

জানুয়ারী ২৯, ২০২৪
বাংলাদেশ
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক ইসলামি  মহাসম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা শুক্রবার থেকে তিন দিনব্যাপী ইজতেমা উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে নানাধরনের প্রস্তুতি। ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। আগত মুসল্লিরা জেলাওয়ারি খিত্তায় (তাঁবু) অবস্থান করবেন। প্রতি বছরের মতো এবারও উর্দু ভাষায় বয়ান করা হবে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ানের সঙ্গে বাংলা ও আরবি ভাষায় তর্জমা করা হবে।

প্রতিবারের মতো এবারো যোগ দেবেন দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি। ফলে ইজতেমাকে সফল করতে আয়োজকদের পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন সংস্থা। সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাও গ্রহণ করেছে নানা ব্যবস্থা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে টঙ্গীর তুরাগ তীরে রেকর্ড সংখ্যক মুসল্লি বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা।
ইজতেমা উপলক্ষে তুরাগ নদীতে এ বছর ছয়টি ভাসমান সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচটি সেতু নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনী এবং একটি বিআইডব্লিউটিএ। এসব ব্রিজ দিয়ে সাময়িকভাবে মুসল্লিরা এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করতে পারবেন। 
অন্যদিকে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১২টি উৎপাদন নলকূপে ১২ কিলোমিটার পাইপ লাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে। প্রায় ৮ হাজার অস্থায়ী টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। ময়দানের চাহিদা মোতাবেক ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ ও ২৫টি ফগার মেশিনে মশা নিধনেরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিদেশিদের আবাসস্থলে টিনের ছাপরা, শৌচাগার নির্মাণসহ ইজতেমায় আগত বিদেশি মুসল্লিদের জন্য ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে টিনের ছাউনি দিয়ে তার নিচে চটের ছাউনির প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। বিদেশি মেহমানদের উন্নত মানের অজু, গোসল ও বাথরুমের পৃথক ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদের রান্নার জন্য সরবরাহ করা হবে প্রাকৃতিক গ্যাস। বিশেষ করে বিদেশি মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য তাদের পুরো ছাউনিটি আলাদাভাবে তৈরি করা হয়। নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দেয় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান জানান, ইজতেমা ময়দান ও শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে মুসল্লিদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। রোগী পরিবহনের জন্য সার্বক্ষণিক ওই হাসপাতালসহ চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে অন্তত ১৫টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন থাকবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ইজতেমা ময়দানে নিয়মিত পানি ছেটানো, মশার ওষুধ দেওয়া, পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে সার্বক্ষণিক একাধিক টিম কাজ করবে। মুসল্লিদের যে কোনও সমস্যায় তারা কাজ করে যাবে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, এবারের বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তায় সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সিসি টিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার ও রুফটপ থেকে পুরো ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া স্পেশালাইজড টিমসহ প্রতিটি খিত্তায় সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন। অগ্নি নির্বাপণের জন্য প্রতি খিত্তায় এবার দুটি করে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা হবে। তুরাগে নৌ-টহলও থাকবে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, দুই পর্বের ইজতেমা সফল করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিক প্রস্তুতিমূলক সভা করেছি।


দুই পর্বের আখেরি মোনাজাতের দিন (৪ ফেব্রুয়ারি ও ১১ ফেব্রুয়ারি) সুবর্ণ, সোনার বাংলা, কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেস ছাড়া সব আন্তঃনগর, মেইল, কমিউটার ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে তিন মিনিট করে যাত্রাবিরতি করবে। অর্থাৎ, এই দুই দিন চারটি ট্রেন বাদে বাকি সব ট্রেন টঙ্গীতে থামবে। এছাড়া, ইজতেমার মুসল্লিদের সুবিধার্থে দুই পর্বের আখেরি মোনাজাতের দিন বলাকা কমিউটার, বনলতা এক্সপ্রেস ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচলের সময় পরিবর্তন করা হবে। ইজতেমা উপলক্ষে সব আন্তঃনগর, মেইল, এক্সপ্রেস, লোকাল ট্রেনে যাত্রী চাহিদা ও প্রাপ্যতা সাপেক্ষে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে।

এনডিটিভিবিডি/২৯জানুয়ারি