ঢাকাই সিনেমার আলোচিত-সমালোচিত নায়িকা পরীমনি। তাঁর ব্যক্তিজীবন যেন খোলা খাতা। আবেগ-অনুভূতি, ভালো লাগা-ভালোবাসা অকপটে প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। মনের জমানো ক্ষোভ–রাগ সবটাই প্রকাশ করেন পরী। অভিনেতা শরীফুল রাজের সঙ্গে প্রেম-বিয়ে, তারপর বিচ্ছেদ সবই হয়েছে প্রকাশ্যে। তারপর এই জুটির ছেলে পুণ্যকে (পদ্ম) নিয়ে পরীর পৃথিবী। মাঝখানে একটু অস্বস্তিকর সময়ে দিন কাটছিল পরীর। সম্প্রতি অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়েছেন আদালত। তবু পরীর দিন যাচ্ছিল কেটে। এবার নতুন খবর দিলেন নায়িকা। এমনকি সুখবরটি সবার আগে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকেই জানালেন অভিনেত্রী।
আনন্দবাজার অনলাইনে চিত্রনায়িকা পরীমনি লিখেছেন, ‘আমার মেয়ে এল ঘরে। আমার মেয়ে, সাফিরা সুলতানা প্রিয়ম। এই নামেই বিশ্ব চিনবে ওকে। ছেলের পরে মেয়ে! কী যে আনন্দ! পৃথিবীতে আসার ছ’দিন হল ওর। আমার ঘরে ছেলের পাশে আলো হয়ে আছে। আমি ওকে দত্তক নিয়েছি। নিয়ম মেনে সই করার সময় মনে হলো, আল্লাহ আবার আমার জন্য কিছু করলেন। জীবনে কোনো দিন কিছু নিয়ম অনুযায়ী বা পরিকল্পনা করে করিনি আমি। তাই আল্লাহ আমার জন্য যা যা চেয়েছেন, তা–ই মাথা পেতে নিয়েছি। ও পরীর মতোই আমার কোলে চলে এল। কোলে যখন নিই, মনে হয় আমার নাভি কেটেই ও এসেছে। ওর ছবি এখন দিচ্ছি না। কেউ রাগ করবেন না! মা তো...আর কিছুদিন যাক।
‘ছেলে আসার পর থেকে বাড়ি ও বাইরের সব দায়িত্ব নিজে সামলাচ্ছি। কী করে যে পারি! ছবির কাজ একটানা করতে পারছি না। কিন্তু আমাকে তো এবার আরও কাজ করতে হবে, ছেলে আর মেয়ের জন্য। খুব শিগগির “প্রীতিলতা”র কাজ শেষ করতে হবে। ওটা আগে করতে চাই। সেই জন্য আগের চেহারায় ফিরতে হবে। আপাতত ‘রঙিলা কিতাব’-এর কাজ করছি। এটা হইচইয়ের জন্য আমার প্রথম কাজ। এখন আরও বেশি করে কাজে মন দেব। এমন কাজ করতে চাই যাতে আমার ছেলে আর মেয়ে যেন তাদের মাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।
‘আমি যা মন থেকে চাই, তা–ই করি। কে কী বলল, সেসব নিয়ে কোনো দিন ভাবিনি। কে বলেছে বাবা ছাড়া সন্তান মানুষ করা যায় না? কে বলেছে জন্ম দেওয়া বাবা-মা ছাড়া সন্তান মানুষ হয় না? এই সব নিয়ম সমাজের তৈরি। এই তো আর কয়েক দিনের মধ্যেই মা দিবস নিয়ে হইচই হবে। কিন্তু সেখানেও তো পিতৃতন্ত্রের আদলে তৈরি করা মেয়েদের জয়গান।’
নায়িকা আরও বলেন, ‘এ সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে কাজ আর সন্তানদের নিয়ে বাঁচব আমি। এখন রাতের দিকে সব শান্ত হয়ে আসার পরে এক দিকে ছেলে আর এক দিকে ঘুমন্ত মেয়ের মাঝে যখন চোখ খুলে দেখি, তখন মনে হয় পরীমনির আকাশটা বড় হয়ে আসছে।’
পশ্চিমবঙ্গে পরীর প্রথম সিনেমা ‘ফেলুবকশি’ নিয়ে ব্যস্ততায় কাটছে পরীর দিন। পাশাপাশি দেশেও আছে বেশ কয়েকটি কাজের ব্যস্ততা। এর মধ্যে পুণ্যকে যত্নে আগলে রেখেছেন পরী। এখন পরীর ঘর আলো করে এল মেয়ে। ছেলের মতোই মেয়ের যত্নে নিজেকে আরও দায়িত্বশীল করে তুলবেন পরী, সেটি তাঁর কথায়ই আন্দাজ করা যাচ্ছে। এখন পরীর মেয়ের মুখ দেখার অপেক্ষায় তাঁর ভক্ত আর শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
এনডিটিভি/পিআর