ঢাকা , রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৭ বছর পর শিরোপা জিতল ভারত

Jun ২৯, ২০২৪
খেলাধুলা
পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৭ বছর পর শিরোপা জিতল ভারত

হলো না ইতিহাস গড়া দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রথম বার ফাইনাল খেলতে নেমে তীরে এসে তরী ডুবল তাদের। ফাইনালে ভারতের কাছে মাত্র ৭ রানে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হলো তাদের। সাতমাস আগেই ভারত নিজেদের মাটিতে হেরেছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল। এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করেনি তারা। ১৭ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে তুলেছিল ম্যান ইন ব্লুরা। সেটা দিয়েই শিরোপার পথে নেমেছিল ধোনির ভারত। লম্বা অপেক্ষা শেষে আবারও সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়েই শিরোপাখরা ঘুচালো দলটা।

শনিবার (২৯ জুন) ব্রিজটাউনে ভারতের দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২ রানেই ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরে জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন কুইন্টন ডি কক ও ট্রিস্টান স্টাবস। এই জুটির কল্যাণে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল তারা। অবশেষে ভেঙে যায় এই জুটিও। যার ফলে ৭০ রানেই ৩ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরে চতুর্থ উইকেটে হেনরিক ক্লাসনকে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়েন কুইন্টন ডি কক। কুইন্টন ডি কক ফিরে যান ৩৯ রান করে। এই জুটি ভাঙার পর ১৬৯ রানে থামে প্রোটিয়াদের ইনিংস। যার ফলে ভারত তুলে নিয়েছে ৭ রানের জয়। এই জয়ে ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত।

ফাইনারে প্রোটিয়াদের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন কুইন্টন ডি কক ও রিজা হেনড্রিক্স। তবে নিজেদের জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তারা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর বলো বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৫ বলে ৪ রান করা রিজা হেনড্রিক্স। তার বিদায়ে ৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

রিজা হেনড্রিক্স এর বিদায়ের পর দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তিনিও ৫ বলে ৪ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। আর্শদীপ সিংয়ের বলে ঋষব পান্তের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে মাত্র ১২ রানেই ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

১২ রানে ২ উইতেট হারানোর পর জুটি গড়েন কুইন্টন ডি কক ও ট্রিস্টান স্টাবস। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাওয়ার প্লেতে তারা তুলে নেন ৪২। এই জুটির কল্যাণে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠছিল প্রোটিয়ারা। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন অক্ষর প্যাটেল। দলীয় ৭০ রানে অক্ষর প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ২১ বলে ৩১ রান করা ট্রিস্টান স্টাবস। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৮ রানের জুটি।

ট্রিস্টান স্টাবসের বিদায়ের পর হেনরিক ক্লাসনকে নিয়ে জুটি গড়েন কুইন্টন ডি কক। দুই ব্যাটরই ভারতীয় ব্যাটারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন। এই জুটিতে ভর করে ১১ ওভার ৩ বলে দলীয় শতক পূর্ণ করে প্রোটিয়ারা। অবশেষে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগের এই জুটিকে থামান আর্শদীপ সিং। আর্শদীপ সিংয়ের বলে কুলদীপ যাদবের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান কুইন্টন ডি কক। আউট হওয়া আগে করেন ৩১ বলে ৩৯ রান। তার বিদায়ে ১০৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

কুইন্টন ডি ককের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন ডেভিড মিলার। ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালাতে থাকেন ক্লাসেন। এই জুটিতে ভর করে ১৫ ওভার ২ বলে দলীয় ১৫০ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জুটির কল্যাণে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল প্রেটিয়ারা।

তবে এর পরেই এই জুটিকে থামান হার্দিক পান্ডিয়া। হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ঋষব পান্তের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান অর্ধশতক তুলে নেওয়া হেনরিক ক্লাসন। তার বিদায়ে ১৫১ রানে ৫ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা।

হেনরিক ক্লাসনের বিদায়ের পর সাজঘরে ফিরে যান মার্কো জানসেনও। ৪ বলে মাত্র ২ রান করে জাসপ্রিত বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ১৫৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় প্রোটিয়ারা। এরপর ক্রমে বাড়তে থাকা রানরেটের চাপ আর সামলাতে পারেনি তারা। স্নায়ুচাপে ভেঙে পড়ে কাছে পৌঁছেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হলো না এইডেন মার্করামের দলের। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা, আর বারত তুলে নেয় ৭ রানের জয়।

এর আগে ব্রিজটাউনে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। ফাইনালে এসে ব্যর্থ টিম ইন্ডিয়ার টপ অর্ডার। মাত্র ৩৪ রানেই সাজঘরে ফিরে যান রোহিত শর্মা, ঋষব পান্ত ও সূর্যকুমার যাদব। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন বিরাট কোহলি ও অক্ষর প্যাটেল। চতুর্থ উইকেটে তারা গড়েন ৭৫ রানের জুটি। অক্ষর প্যাটেল ৪৭ রানে ফিরে গেলেও অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন তিনি। অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর ৭৬ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ের পর নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান সংগ্রহ করে ভারত।

এনডিটিভি/পিআর