নিজস্ব প্রতিবেদক : ১ জুন শুরু হয়েছে ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে শীর্ষ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় রেজিস্ট্রেশন। শেষ হবে ১৯ আগস্ট। দলবদলের জন্য লম্বা একটা সময় নির্ধারণ হলেও সব সময়ই শেষ দিকে এসে ক্লাবগুলো খেলোয়াড়দের নিবন্ধন ফরম বাফুফেতে জমা দেয়।
এবারও হাতে গোনা কিছু খেলোয়াড় নিবন্ধন হয়েছে দুই মাসের অধিক সময়ে। তবে প্রিমিয়ার লিগের দুটি ক্লাব আবাহনী ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর লুটপাট ও ভাংচুর হওয়ায় ঘোষিত সময়ের মধ্যে তাদের পক্ষে খেলোয়াড় নিবন্ধন করা কঠিন হয়ে গেছে। এই দুই ক্লাব এরই মধ্যে মৌখিকভাবে বাফুফেকে জানিয়েছে তাদের পরিস্থিতি।
তাহলে কি ১৯ আগস্টের মধ্যেই কি বাফুফে দলবদল প্রক্রিয়া শেষ করবে নাকি সময় বাড়িয়ে দেবে? এ বিষয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার শুক্রবার রাতে বলেন, ‘ফিফা ও এফসির নিয়ম অনুযায়ী ট্রান্সফার উইন্ডো হবে সর্বোচ্চ ১২ সপ্তাহ। আমরা উইন্ডো ঘোষণা করেছি ১১ সপ্তাহ ২ দিনের, যা শেষ হবে ১৯ আগস্ট। আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দুটি ক্লাবে ভাংচুরের ঘটনা মৌখিকভাবে জানিয়েছি এএফসিকে।’
এএফসির নিয়মের মধ্যে খেলোয়াড় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হলে বাফুফে সর্বোচ্চ ৫ দিন সময় বাড়াতে পারবে। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক কলেছেন, ‘আমরা পুরো বিষয়টা এএফসিকে লিখিতভাবে জানাবো এবং আমাদের করণীয় কি, সেটা জানতে চাইবো। তাদের মতামত ছাড়া এখন দলবদলের সময় বাড়ানোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। আমরা ক্লাবগুলোর সুবিধার্থে যা করা দরকার সেই চেষ্টা করছি।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর মধ্যে অন্যতম দুই শীর্ষ ক্লাব আবাহনী ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল।
ধানমন্ডি ক্লাবের নামকরণ বঙ্গবন্ধুর মেঝো ছেলে শেখ জামালের নামে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই এ দুটি ক্লাবে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্লাব পরিচালনা করা কর্মকর্তাদের সিংগভাগ আওয়ামী লীগের নেতা। তারা কে কোথায় আছেন, তা জানতে পারছেন না ক্লাবের স্টাফরাও।
এ ছাড়া লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ক্লাবের সব ধরনের কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবে কাজ শুরু করতে না পারা পর্যন্ত অর্থকড়ির সংকটেও থাকবে ক্লাব দুটি।
ফুটবল দল তৈরির জন্য কোটি কোটি টাকা প্রয়োজন। এ অবস্থায় এই দুই ক্লাবের জন্য খেলোয়াড়দের অগ্রিম পারিশ্রমিক দিয়ে দলে নেওয়াও কঠিন। যে কারণে তৈরি হয়েছে দলবদল নির্ধারিত সময় শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা।
হাতে মাত্র ১০ দিন। এই অল্প সময়ের মধ্যে সাবেক এই দুই চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের পক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়ে খেলোয়াড় নিবন্ধন সম্ভব কিনা, তা জানতে কোনো উর্ধ্বতন কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাদের কারো ফোন বন্ধ, কারো খোলা থাকলেও রিসিভ করছেন না।
আবাহনী ফুটবল দলের ম্যানেজার কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্লাবের কী অবস্থা, তাতো আপনি নিজেই দেখেছেন। আমরা বাফুফেকে মৌখিকভাবে শুধু দুুর্ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছি। এখন আমরা বাফুফের দিকেই তাকিয়ে আছি। ক্লাবের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে আমি এর বেশি কিছু বলতে পারছি না। আমরা শুধু স্থানীয় ফুটবলাদের নিবন্ধন করিয়েছে এখন পর্যন্ত।’
এনডিটিভিবিডি/০৯আগস্ট/এএ