নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৭ জুলাই ২০২৪। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের প্রধান উদ্যোক্তা সাঈদুর রহমান প্যাটেল। তখন দেশে বৈষম্যাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তুঙ্গে। হাসপাতালের বেডে নিজের ও ঢাকার উত্তাল আন্দোলনের অগ্নি সংযোগের একটি ছবি দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘এমন দৃশ্য বেঁচে থেকে দেখে যাবো তা স্বপ্নেও কখনও ভাবি নাই। হে মহান আল্লাহ্, আপনি আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেন আমিন।’
৩০ জুলাই অপারেশনের পর আরেকটি স্ট্যাটাসে সাঈদুর রহমান প্যাটেল লিখেছিলেন, ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে যে জায়গাটিতে পাকবাহিনীর বুলেটে ফুটো হওয়ার কথা ছিলো, বিলম্বিত হলেও উক্ত স্থানটি ফুটো (অপারেশনের জন্য ছিত্র করা স্থানটি) দেখতে হলো! আমার মহান স্বৃষ্টিকর্তা আমার রবকে বুকে ধারন করে বেঁচে আছি আমিন।’
মরনব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বছর খানেক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টার দিকে সেই হাসপাতালেই তিনি ইন্তেকাল করেছেন। প্যাটেলের আত্মীয় ডাক্তার লাভলী এ খবর নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি এক ছেলে ও মেয়ে রেখে গেছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল তৈরি হয়েছিল সাইদুর রহমান প্যাটেলের নেতৃত্বে। ২৫ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়াম সাক্ষী হয়েছিল অনন্য এক ইতিহাসের। ভারতের মাটিতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল প্রথম ম্যাচটি খেলেছিল নদীয়া জেলা ক্রীড়া সমিতি দলের বিপক্ষে।
স্বাধীনতার জন্য জনমত তৈরি আর তহবিল গড়তেই এপার বাংলার একদল ফুটবলযোদ্ধা ফুটবল ম্যাচ খেলা শুরু করেন ভিনদেশে। ১৫টির মতো ম্যাচ থেকে ওঠা টাকা মুক্তিযোদ্ধা তহবিলে দেওয়া হয়েছিল।
এনডিটিভিবিডি/০৮আগস্ট/এএ
ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন সাঈদুর রহমান প্যাটেল। বসবাস করতেন রাজধানীর গেন্ডারিয়ায়।