ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুর থেকে লাখ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক ঈদ যাত্রায় শামিল হয়েছেন। এতে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের ঢল নেমেছে। এ অবস্থায় চন্দ্রা পয়েন্টে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রার কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির দীর্ঘ সারি রয়েছে। কবিরপুর থেকে চন্দ্রা পার হয়ে ঈদ যাত্রার গাড়িগুলোর মহাসড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। এতে মহাসড়কে চলাচলকারী দুরপাল্লার যানবাহনগুলো গতি হারাচ্ছে। গতি হারিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য যানজট তৈরি হয়েছে। গাজীপুর ছাড়াও গাবতলী, আশুলিয়া, বাইপাল, সাভার ও নবীনগর এলাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো চন্দ্রা এলাকা পার হয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কে পৌঁছার পর কবীরপুর থেকে যানজটের শুরু। রাস্তার একপাশে এলোমেলো গাড়ি পার্কিং ও যাত্রী ওঠানামা করায় টাঙ্গাইলমুখী দুই লেনের সড়ক এক লেনে পরিণত হয়েছে। এছাড়া চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ছেড়ে আসা গাড়ি চন্দ্রা ফ্লাইওভার ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গ যাচ্ছে। এসব গাড়ি ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে গিয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গাড়ির সঙ্গে মিলিত হচ্ছে। ফলে এই অংশে গাড়ির চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে মানুষের চাপ ও গড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ পয়েন্টে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে কবীরপুর থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার গোয়াল বাথান এবং সফিপুর থেকে চন্দ্রা ত্রিমোড় পর্যন্ত।
মোটরসাইকেল আরোহী শান্ত মিয়া বলেন, রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। এতে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। সকাল ৬টায় মহাখালী থেকে রওনা দিয়ে দুই ঘণ্টায় চন্দ্রা পৌঁছাতে পেরেছেন তিনি।
যাত্রীদের অভিযোগ, ঈদ যাত্রাকে কেন্দ্র করে কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। চন্দ্রা ত্রিমোড় পর্যন্ত পৌঁছতে অটোরিকশায় যেখানে ৩০ টাকা ভাড়া ছিল এখন সেই ভাড়া ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়া রংপুর, বগুড়া, কুড়িগ্রামসহ উত্তরবঙ্গের গাড়ি স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। যেখানে ৫০০ টাকা ভাড়া ছিল সেখানে ১০০০-১২০০ টাকা ভাড়া আদায় করছেন। তবে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকাগামী গাড়িতে যাত্রী না থাকায় খরচ ওঠাতে তারা বেশি ভাড়া আদায় করছেন
এদিকে, ঈদের আগ মুহূর্তে পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় একযোগে ছুটছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল সহ অযান্ত্রিক যানবাহনে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করছেন।
নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন বলেন, শেষ মুহূর্তে মানুষের ঢল বাড়ার পাশাপাশি গাড়ির চাপ বাড়ায় গাড়ির গতি কিছুটা কম। তবে বিকেলের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। যানজট নিরসনে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ কাজ করছে।
অপরদিকে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে যাত্রীদের অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রাখায় হয়েছে স্বল্প দুরত্বের চলাচলকারী বাস, মিনিবাস, ট্রাক ও পিকআপ। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তায় গাড়ির গতি কিছুটা কম রয়েছে। তবে অন্য অংশে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করছে।