নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্র্বতী সরকারকে সময় দেবো, কিন্তু সেটা আজীবন নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক দল, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, দেশের মানুষও সেটা বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ সরকার আর বিএনপির সরকারের দেশ পরিচালনা করা এক নয়। অন্তর্র্বতী সরকারের দায়িত্বশীল এক ব্যক্তি বলেছেন তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি উত্থান হওয়া দরকার- দেশবাসীর কাছে এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা তাকে দিতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন কখনো দেশ ছেড়ে যাননি, কারণ তিনি বলেছিলেন দেশের বাইরে আমার কিছু নেই, দেশের জনগণই আমার সব। অথচ তথাকথিত আওয়ামী লীগের নেত্রী পাশের দেশে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ আজ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। জনগণের অধিকার আন্দোলনের এখনো পুরো ফয়সালা হয়নি। অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি আহ্বান, অনতিবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।’
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘দেশের মুক্তিকামী জনতা যেই ইতিহাস সৃষ্টি করে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়েছে, তাদের ইতিহাস শুধু বাংলাদেশের ভেতরে নয় বহির্বিশ্বেও থাকবে। আমরা অন্তর্র্বতী সরকারকে সহযোগিতা করে আসছি এবং সহযোগিতা করবো। তবে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজকের সমাবেশের উপস্থিতি প্রমাণ করে বিএনপি গণতন্ত্রের দল। বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে জনগণের পাশে থাকার ইতিহাস। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার ইতিহাস। আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা পাবে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারা দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে। যাদের আত্মত্যাগে দেশের আন্দোলন সফল হয়েছে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। দেশ হায়েনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।’
দলের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছিলেন ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। ফ্যাসিবাদী সরকারকে বৈধতা দেওয়া হবে না- সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘তারেক রহমানের সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে।’
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লব সুসংহত রাখতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ভোটের অধিকার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত রাজপথে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে সবসময় বলা হয়েছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে। তিনি শুনেননি, শুনলে পালিয়ে যেতে হতো না।’
যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। বিগত সরকারের ১৫ বছরে যারা গুম-খুনের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের বিচার করতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আন্দোলনে শহীদ নেতাকর্মীদের বিশেষ অনুদানের ব্যবস্থা করতে হবে। গণতন্ত্রের সংগ্রামকে যারা বিভ্রান্ত করে দেখাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে।’
এনডিটিভিবিডি/১৭সেপ্টেম্বর/এএ