ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গার্মেন্টস সেক্টরে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো, যেটাই বলেন, সেটাই বিএনপি করেছে। দেশের ১০০ ভাগ ভালো কাজের মধ্যে ৭০ ভাগ বিএনপি করেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি কাগজপত্র ও কলমের হিসাব। এজন্যই জনগণ বিএনপির ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁওয়ের তথা দেশের স্বনামধন্য উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও’র প্রধান কার্যালয় ঠাকুরগাঁওয়ে জয়নাল আবেদীন মিলনায়তনে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে, নানা রকম সমস্যা আছে। তার ভেতর দিয়েই আমরা চলছি। তার ভেতর দিয়েই আমরা চেষ্টা করছি কিছু করার। মানুষকে দেওয়া কমিটমেন্টগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য। আমরা যেটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি সেটা পূরণ করার জন্য বদ্ধপরিকর।’
তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ যারা এখানে উপস্থিত আছেন, তারাও ভবিষ্যতে জনপ্রতিনিধি হতে পারেন। আর না হলেও আপনারা তো জনগণেরই অংশ, আপনাদের মাধ্যমেই আমরা আমাদের ৩১ দফা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই।’
সংস্কারের বিষয়ে বিএনপির মতপার্থক্য আছে এবং অতীতে দলটির দেশ সংস্কার প্রচেষ্টার ইতিহাস তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি দেশের সংস্কার শুরু করেছিল সেই জিয়ার সময় থেকে। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময় প্রেসিডেন্সিয়াল ফাউন্ড থেকে সংসদীয় পদ্ধতি। এগুলোতো সংস্কারেরই অংশ।
এছাড়া, বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার করে আসার চেষ্টা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ও সংস্কার করেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘সেটি শিক্ষা থেকে শুরু করে, প্রশাসন, দেশ পরিচালনা, স্বাস্থ্য, খাদ্য উৎপাদন, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রেই বিএনপি শুধু সংস্কারে অবদান রেখেছে না সংস্কারও করেছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংস্কারের দুইটি বিষয় দেখেছি, কার ক্ষমতা বাড়বে, কার ক্ষমতা কমবে। কৃষি, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, সবকিছু নিয়ে ৩১ দফায় আনার চেষ্টা করেছি।’
সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, আমরা সংস্কার শুরু করব আমাদের পরবর্তী জেনারেশন ও নেতাকর্মীরা সেটি চালিয়ে নিয়ে যাবেন। সংস্কার এমন একটি বিষয়, যেটি চলমান প্রক্রিয়া।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি চাপের মধ্যেই সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। যখন নিষ্পেষিত, যখন আমার মহাসচিব জেলে, পার্টির চেয়ারপারসন জেলে। দলের হাজারো নেতাকর্মী তখন জেলে। লাখো নেতাকর্মী গায়েবি মামলায় যখন দরজার পেছনে ছিল, অপেক্ষা করছিল ঠিক কোন সময় তারা আবার বেরিয়ে আসবে সংগ্রামে নামবে। ঠিক সেই সময় আমি সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘এই দলকে প্রতিষ্ঠা করতে বহু সংগ্রাম করতে হয়েছে, বহু পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হয়েছে। বহু নেতা-কর্মী জীবন দিয়েছেন, কেউ কেউ পঙ্গু হয়েছেন। মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু আমরা যা বলেছি তাই করবো ইনশাল্লাহ। যেটা কমিটমেন্ট মানুষের সঙ্গে করেছি আমরা সেটা করব।’
সংস্কারকে একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজ যেটুকু শুরু করব, পরবর্তী প্রজন্ম সেটি এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন। ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা পর্যায়ের নেতারা।