নিজস্ব প্রতিবেদক : হঠাৎ করে দেশের ভেতরে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। ফলে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে আবার টানা দরপতন দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক সামান্য বাড়লেও কমেছে অন্য দুই সূচক। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস বাজারটিতে মূল্যসূচক কমলো।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সূচক কমলেও দুই বাজারেই দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
এর আগে শেয়ারবাজারে টানা ছয় কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়ে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে আবার শেয়ারবাজারে দরপতনের প্রবণতা দেখা দেয়।
এ বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ার শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এখন আবার রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। ফলে মানুষের মধ্যে আবার অনিশ্চয়তার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার ডিএসইতে সবখাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৬৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৬টির। আর ৭৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৯৭টির দাম কমেছে এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৪৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ২৩টির দাম কমেছে এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৯টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক মিশ্র থাকলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। বাজারটিতে ৬৫৩ কোটি ৬৯ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৬৪ কোটি ৩৭ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৮৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিপার্ল বিচ রিসোর্ট। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুন্নু সিরামিক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স, বিচ হ্যাচারি, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ব্র্যাক ব্যাংক, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং কাশেম ইন্ডাস্ট্রি।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৬টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
এনডিটিভিবিডি/১৫জুলাই/এএ